রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:২২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
“হাই কোর্টে রিট ” নড়াইল ২ আসনের সতন্ত্র প্রার্থী লায়ন নূর ইসলাম। কালের খবর বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘন্টা অবরোধের সমর্থনে ডেমরা থানা ছাত্রদলের মশাল মিছিল। কালের খবর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্র উৎসব ২০২৩-এর প্রস্তুতি সম্পন্ন। কালের খবর নড়াইল-২ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী লায়ন নূর ইসলাম। কালের খবর বিএফইউজে’র রিপোর্ট সাংবাদিক নিপীড়নের চিত্র : ১১ মাসে খুন, হামলা, মামলা, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার ২৯৬ সাংবাদিক। কালের খবর সরকারের চাপে পড়ে যে কজন হেভিওয়েট নেতা বিএনপি থেকে বেরিয়ে ভোটে অংশ নিচ্ছেন। কালের খবর মানবতার সেবায় উদাহরণ হয়ে থাকবেন ঠাকুরগাঁও জেলার পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক। কালের খবর সিরাজগঞ্জ- ৬ শাহজাদপুর আসনে নৌকার মনোনয়ন পেলেন মোঃ চয়ন ইসলাম। কালের খবর আসন্ন সংসদ নির্বাচনে রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের মনোনয়নপত্র জমা। কালের খবর প্রতিদিন পাচার হচ্ছে ৪০-৫০ লাখ টাকা, ধরাছোঁয়ার বাইরে চক্রের সদস্যরা। কালের খবর
কুষ্টিয়ায় সরকার নির্ধারিত দামে মিলছে না পণ্য, বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু ও পেঁয়াজ। কালের খবর

কুষ্টিয়ায় সরকার নির্ধারিত দামে মিলছে না পণ্য, বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু ও পেঁয়াজ। কালের খবর

 

মোঃ ইসমাইল হুসাইন কুষ্টিয়া প্রতিনিধি, কালের খবর : কুষ্টিয়ার বাজারে আলু ও পেঁয়াজ নিয়ে জনসাধারণের ভোগান্তি কমছে না। অনেক ক্ষেত্রে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টাও চলছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে দেশে প্রথমবারের মতো সরকার ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দাম বেঁধে দিলেও মূল্য নির্ধারণের ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও কুষ্টিয়ার বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে মিলছে না পণ্য। উল্টো হিমাগার মালিক ও ব্যবসায়ীরা পণ্য দুটির সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের অভিযানের পরও নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রি করতে নারাজ ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি আড়ত থেকে কিনছেন বেশি দামে। তাই লোকসানে বিক্রি সম্ভব নয়।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে কুষ্টিয়ার পৌর বাজার ও বড় বাজার ঘুরে একইদৃশ্য দেখা গেছে। তবে অনেক ক্রেতা ও বিক্রেতা তিনটি কৃষিপণ্যের বেঁধে দেওয়া দামের বিষয়েও জানেন না।
১৪ সেপ্টেম্বর(বৃহস্পতিবার) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খুচরা বাজারে প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা, প্রতি কেজি আলু খুচরা পর্যায়ে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা, এবং পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয়।
ঘোষণার পর থেকে বাজারে এই দাম কার্যকর করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কুষ্টিয়ার বাজারে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু ও পেঁয়াজ।

তবে কুষ্টিয়ার বাজারে ডিমের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে কুষ্টিয়ার পৌর বাজারে ঘুরে দেখা যায় আলুর প্রকারভেদে প্রতি কেজি ৪২ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকা। ডিমের বাজারে সরকার নির্ধারিত ১২ টাকা দামেই পাওয়া যাচ্ছে ডিম। কুষ্টিয়া পৌরবাজার ছাড়াও বড়বাজারেও একই চিত্র। কোথাও সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য কিনতে পারছেন না ক্রেতারা।

‘সরকারের বেধে দেওয়া দামে পণ্য বিক্রি হচ্ছে না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বিক্রেতাদের অজুহাতের শেষ নেই। বিক্রেতারা জানিয়েছেন তারা বাড়তি দামে মোকাম থেকে পণ্য ক্রয় করছেন। তবে অধিকাংশ বিক্রেতারা বলছেন সরকারের নির্দেশনা কার্যকর হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। তাছাড়া বাজারের দাম কমাতে হলে আগে মোকাম এবং পাইকারিদের দাম কমাতে হবে বলেও জানান তারা।

পৌর বাজারের আলু বিক্রেতা ঝন্টু জানান,সরকারের নির্ধারিত আলু বিক্রির দাম রয়েছে ৩৬ টাকা। কিন্তু আমরা মহাজনের থেকে ৩৬ টাকার বেশি দামে কিনে এনেছি। তাহলে সরকার নির্ধারিত ৩৬ টাকা করে বিক্রি কিভাবে করব। তাই সাদা ও লাল আলু মানভেদে ৪২ থেকে ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন,আমরা কমে কিনতে পারলে কমে বিক্রি করতাম। আমরা যদি কম দামে কিনতে পারি তাহলে তো বেশি দামে বিক্রি করার কোনো মানে হয় না।

মনিরুল নামে এক বিক্রেতা বলেন, ভোক্তা পর্যায়ে আসার আগেই দামের বিভিন্ন স্তর রয়েছে। আমাদের খুচরা বাজারে যে কোনো পণ্যের দাম আড়তের সঙ্গে মিলিয়ে বিক্রি করতে হয়। আড়ত যদি রাতারাতি দাম কমিয়ে দেয়, তাহলে আমরাও কমে বিক্রি করতে পারি। আবার আরত যদি রাতারাতি দাম বাড়িয়ে দেয়,তাহলে আমাদেরও বেশি দামেই বিক্রি করতে হবে। দামটা আসলে সরাসরি আড়তের সঙ্গে নির্ধারিত।

পৌর বাজারের আলুর আড়তদার উচ্চাশা ভান্ডারের মালিক মাসুদুর রহমান তোতা বলেন, পৌর বাজারের আলুর আড়ত থেকে দৈনিক ২৫০ থেকে ৩০০ বস্তা আলুর চাহিদা রয়েছে। যা শহরের বিভিন্ন বাজারে যায়। তাছাড়া সাপ্তাহিক হাটের দিন তা ৫০০ বস্তা ছাড়িয়ে যায়। দিনাজপুর,রংপুর,বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা আলু কুষ্টিয়ার চাহিদা পূরণ করে। এখন পর্যন্ত হিমাগারে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলু মজুদ রয়েছে। সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পর হিমাগারে রাখা মজুদদাররা বাজারের চাহিদানুযায়ী আলু সরবরাহ করছে না।

একই বাজারের ব্যবসায়ী আইনাল শেখ। পেঁয়াজ, মরিচ,রসুন ও আদার পসরা সাজিয়ে বসে ছিলেন তিনি। দেশি পেঁয়াজের দাম জিজ্ঞাসা করতেই দোকানি বললেন, ৮০ টাকা কেজি হলে নিতে পারবেন। তবে প্রকারভেদে কিছুটা কমে বিক্রি হচ্ছে। আলাপকালে বলেন, সরকারের নতুন সিদ্ধান্তের কথা তিনি জানলেও তার কিছু করার নেই।
দোকানটির পাশে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতেই দেখা গেল মধ্যবয়স্ক এক ব্যক্তি আধা কেজি পেঁয়াজ কিনলেন ৪০ টাকায়। পরে তাঁর সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে কথা হলো। তিনি বলেন,তার নাম নিশীত দত্ত। ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না।

হাফিজ আল আসাদ নামে আরেকজন ক্রেতা বলেন, ‘সরকার থেকে আলুর দাম নাকি নির্ধারণ করে ৩৫ টাকা করে দিয়েছে। কিন্তু আমাদের তো ৪৫ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। এখন তো সিন্ডিকেটের কাছে সরকার অসহায় বলে মনে হচ্ছে।

শাহিন আলী নামের আরেক ক্রেতা জানান,সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী তিনটি পণ্যের দাম কমার কথা শুনে আমরা কিছুটা আনন্দিত হয়। এতে বাজারে স্বস্তি আসবে বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু বাজারে গিয়ে দেখি আগের দাম ও বর্তমান দাম একই রয়েছে। সরকারের নির্ধারিত মূল্য দ্রুত কার্যকর করতে সংশ্লিষ্টদের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলেও জানান এই ক্রেতা।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল বলেন,সরকারের নির্ধারিত দাম কার্যকর করতে বাজার তদারকি ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তারপরেও কিছু ব্যবসায়ী আলু মজুদ করে দাম বাড়ানো অব্যাহত রেখেছে। বিক্রেতারা যদি নির্ধারিত দামে বিক্রি না করেন, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com