আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। ডেঙ্গু দ্রুত বাড়ার কারণে মুগদা হাসপাতালে দিন দিন রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ডেঙ্গু ওয়ার্ডগুলোতে রোগীদের জন্য নির্ধারিত শয্যা পূর্ণ হয়ে গেছে। অনেকে মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালে মশার উপদ্রব থাকলেও কাউকে মশারি টাঙাতে দেখা যায়নি। নতুন রোগী ২ দিন ধরে ভর্তি হওয়ার পরও মশারি পায়নি।
মঙ্গলবার হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২৮৮ জনেরও বেশি রোগী। তাদের মধ্যে পূর্ণবয়স্ক ২২৯ জন, শিশু ৫৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩১ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ জন এবং গত ৪ দিনে ৭ জন রোগী মারা গেছে। ১ জুলাই থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত ৪ দিনে রোগী ভর্তি হয়েছে ৩৬৪ জন।
ডেঙ্গু রোগী বাড়ায় নির্ধারিত শয্যা শেষ হওয়ার পর হাসপাতালের মেঝেতে রেখে রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ১৭ মাসের শিশু রাইফাকে নিয়ে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে আছেন তার মা। হাসপাতালে নির্ধারিত সিট না থাকায় ফ্লোরে বিছানা পেতে ২ দিন ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মানিকনগর থেকে রবিন (৭) নামের শিশু ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে মঙ্গলবার হাসপাতালে আসে। সিট না পেয়ে ফ্লোরেই বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়।
হাসপাতালের পুরুষ ডেঙ্গু ওয়ার্ডে রোগীর নির্ধারিত শয্যা ১০০টি। মহিলা ডেঙ্গু ওয়ার্ডে শয্যা রয়েছে ৯০টি। সেখানেও ডেঙ্গু রোগীরা শয্যা না পেয়ে ফ্লোরে বিছানা পেতে চিকিৎসা দিচ্ছেন রোগীদের।
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, প্রতিনিয়তই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। প্রথমে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কাজলা, মাতুয়াইল, পলাশপুর, জুরাইন, শনিরআখড়া, মুগদা, মান্ডা এলাকার রোগী ভর্তি হলেও এখন সারা ঢাকা শহর থেকেই রোগী ভর্তি হচ্ছে। এমনকি আমাদের হাসপাতালে ঢাকার বাইরে থেকেও প্রচুর রোগী এসে ভর্তি হচ্ছে। এর লাগাম টানা জরুরি, আশঙ্কাজনক হারে ছড়িয়ে পড়ার আগে পরিকল্পিতভাবে এর প্রতিরোধ করা প্রয়োজন।
ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী আমরা সামাল দিচ্ছি। যদিও আমাদের জনবল খুব বেশি নেই। আমার ডাক্তার ও নার্সের সংকট রয়েছে। তারপরও আমরা ম্যানেজ করে চালিয়ে নিচ্ছি।
পুরান ঢাকা প্রতিনিধি জানান, ঈদের ছুটির পর থেকে পুরান ঢাকা ও কেরানীগঞ্জ এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। গত কয়েক দিনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বেড়ে চলছে। মঙ্গলবারও রাজধানীর মির্টফোর্ড হাসপাতালে ৯৮জন ডেঙ্গি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এসব রোগীর অধিকাংশই রাজধানী লাগোয়া কেরানীগঞ্জ থেকে এসেছে। তাদের হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিন হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, অন্য রোগীর সঙ্গে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে অনেকের জন্য মশারির ব্যবস্থা করছে কর্তৃপক্ষ। এভাবে ডেঙ্গু অন্য রোগীর মাঝে ছড়িয়ে পড়তে পারে কিনা? এমন প্রশ্নে হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাশিদুন নবী কালের খবরকে বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের মশারি সরবরাহ করা হচ্ছে। গত এক মাসে হাসপাতাল থেকে অন্তত হাজারও রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
অফিস : ৪৪-ক, অতিশ দীপঙ্কর রোড, মুগদা, ঢাকা । সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএস ভবন, ১২০/এ মতিঝিল, ঢাকা
মোবাইল : ০১৭৫৩-৫২৬৩৩৩ ই-মেইল : dainikkalerkhobor5@gmail.com
কারিগরি সহযোগিতায় ফ্লাস টেকনোলজি