শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
যৌথ বাহিনীর অভিযান: থানচি-রুমা-রোয়াংছড়ি ভ্রমণে বারণ সাতক্ষীরার দেবহাটায় ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি সহ আহত পাঁচ। কালের খবর সাপাহারে রাতের অন্ধকারে ফলন্ত আম গাছ কাটল দূর্বৃত্তরা। কালের খবর বাঘারপাড়ায় হাঙ্গার প্রজেক্টের সামাজিক সম্প্রীতি কমিটির সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসার’র মতবিনিময়। কালের খবর রায়পুরায় মরহুম ডাঃরোস্তাম আলীর ২৭ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে ইফতার ও দোয়া মাহফিল। কালের খবর ভাতৃত্ববোধ সুদৃঢ় করতে রায়পুরাতে দোয়া ও ইফতার। কালের খবর রিয়াদে বাংলাদেশ প্রবাসী সাংবাদিক ফোরামের ইফতার মাহফিলে প্রবাসীদের মিলন মেলা। কালের খবর ঢাকা প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবসে গুনীজনদের আলোচনা সভা সম্পন্ন। কালের খবর আরজেএফ’র উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল সম্পন্ন। কালের খবর সাতক্ষীরার সুন্দরবন রেঞ্জে ২৪ জন হরিন শিকারীর আত্মসমর্পণ। কালের খবর
কুষ্টিয়ায় আড়াই মাসে সরকারি ধান সংগ্রহ এক ছটাকও হয়নি। কালের খবর

কুষ্টিয়ায় আড়াই মাসে সরকারি ধান সংগ্রহ এক ছটাকও হয়নি। কালের খবর

মোঃ ইসমাঈল হুসাইন কুষ্টিয়া প্রতিনিধি কুষ্টিয়া, কালের খবর : কুষ্টিয়া জেলার ৬টি উপজেলায় আমন মৌসুমে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরুর আড়াই মাসের বেশি সময় পার হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এক ছটাক ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ। গত ১৭ নভেম্বর এ অভিযান শুরু হয়। বাজারদরের তুলনায় সরকারি দাম কম, প্রচারণা ও তদারকি না থাকা, কর্মকর্তাদের অনিয়ম, কৃষক হয়রানিসহ নানা কারণে খাদ্য গুদামে কৃষকের ধান বেচায় আগ্রহ নেই বলে জানা গেছে। নির্ধারিত সময়ে ধান সংগ্রহ করা যাবে কিনা— সে বিষয়েও মাথাব্যথা নেই খাদ্য কর্মকর্তাদের।

জানা গেছে, কুষ্টিয়া জেলার ৬টি উপজেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৫৬৮ মেঃ টন। এর মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ১ হাজার ৩২৪ মেঃটন, খোকসায় ৪২১ মেঃটন, কুমারখালীতে ৮৭৮ মেঃটন, মিরপুরে ১ হাজার ২৯২ মেঃটন, ভেড়ামারায় ৪০৯ মেঃটন ও দৌলতপুর উপজেলায়র ১ হাজার ২৪৪ মেটন। নিয়ম অনুযায়ী কৃষকের অনলাইনে আবেদন করার কথা থাকলেও কেউ আগ্রহ দেখাননি। ফলে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারী) পর্যন্ত এক কেজি ধানও সংগ্রহ হয়নি। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী সরকারি ভাবে আমন ধান সংগ্রহের শেষ দিন ধায্যর্ করা হয়েছে। সময় আছে আর মাত্র এক মাস। কৃষকদের অভিযোগ, আগের বছরগুলোয় ধানের সরকারি দর বাজারের চেয়ে বেশি থাকায় প্রকৃত কৃষকরা সুযোগ পাননি। ফলে এবার খোঁজ রাখেননি অনেকে। যাঁরা গুদামে ধান বিক্রি করেছেন, তাঁদের রয়েছে তিক্ত অভিজ্ঞতা। কতৃর্পক্ষ বলছেন গত বছর আমন ধানের সরকারি মূল্য ছিল ২৬ টাকা কেজী, চলতি বছরে ওই ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ টাকা কেজী। এর পরেও চাষীরা খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহ করছে না। দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম লিমন জানান, মৌসুমে উপজেলার ১৯ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। ফলনও মোটামুটি ভালো। উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ৯১২ মেঃটন ধান।

কৃষক ও সংশ্নিষ্টদের অভিযোগ, খাদ্য দপ্তরের কর্মকর্তা—কর্মচারী কর্তৃক পদে পদে হয়রানি, ওজনে বেশি নেওয়া নিত্যদিনের ঘটনা। অভিযানের বিষয়ে এ বছর তেমন প্রচারণা নেই। সে কারণে সঠিক তথ্য জানেন না অনেকে। খাদ্য দপ্তরের কর্মকর্তা—কর্মচারীরা নানা অনিয়মে জড়িয়েছেন। ব্যবসায়ী ও দালালদের ওপর নির্ভরশীল তাঁরা। দৌলতপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আয়েশা খাতুনের যাবতীয় বিষয় দেখভালের কথা থাকলেও তিনি অফিস করেন না। ওসিএলএসডি শাহাবুল ইসলামের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ।

প্রাগপুর গ্রামের কৃষক আহাম্মদ আলী জানান, নিয়মিত ধানের আবাদ করেন তিনি। প্রয়োজনের অতিরিক্ত অংশ বিক্রি করেন। আগে দু—একবার খাদ্যগুদামে ধান বিক্রির চেষ্টা করেছিলেন। তবে কর্মকর্তাদের অসহযোগিতায় ব্যর্থ হয়েছেন। এ জন্য আর আগ্রহ নেই তাঁর। একই ধরনের অভিযোগ খলিষাকুন্ডি গ্রামের কৃষক মুকাদ্দেস আলীর। তিনি বলেন, কৃষকের নাম ব্যবহার করে কমিশনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহে বেশি আগ্রহী কর্মকর্তা—কর্মচারীরা।
ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) শাহাবুল আলম দাবি করেন, কৃষকদের কোনো হয়রানি করা হয় না। প্রকৃত কৃষকের নামের বিপরীতে ধান কেনা হয়। কৃষক সেজে অন্য কেউ ধান দিলে কিছু করার থাকে না।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আয়েশা আক্তার বলেন, সরকার নির্ধারিত দিনে ধান সংগ্রহের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে দাম বাজারমূল্যের তুলনায় কম হওয়ায় কৃষকের আগ্রহ নেই। গুদামে কৃষক হয়রানির বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। এ ছাড়া শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় নিয়মিত অফিস করা সম্ভব হয় না তাঁর। এতে দাপ্তরিক কাজে সমস্যা হয় না বলে দাবি এ কর্মকর্তার।
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল জব্বার বলেন, ধান বিক্রিতে কৃষকদের আগ্রহী করতে খাদ্য দপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস না করার সত্যতা পাওয়া গেছে। তাঁকে নিয়মিত অফিস করতে বলা হয়েছে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চিত্র একই। খাদ্য গুদামে চাষিরা ধান বিক্রি করতে অনিহা। কারন হিসেবে চাষিরা জানায় গত বছরে তারা ধান বিক্রি করতে পারেনি। নানা রকমের হয়রানির স্বীকার হয়েছে। চাষিদের কাছ থেকে ধান কিনে রাজনৈতিক ব্যক্তিরা গুদামে ধান সরবরাহ করেছে। অথচ কথা ছিল চাষিদের নিকট থেকে সরাসরি ধান ক্রয়ের কথা। যে কারনেই এবার চাষিরা খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করছে না। চাষি নওশের আলী বলেন, এ বছর মাঠ থেকেই ব্যবসায়িরা ধান ক্রয় করে নিয়েছে। এতে করে চাষিরা লাভবান হয়েছে। কোন খরচ লাগে নি। ধান বিক্রিতে হয়রানিও হতে হয়নি।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সুবীর নাথ চৌধুরীর সাথে এব্যাপারে কথা বলতে গেলে তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। তবে তার কায্যলয়ের কর্মকর্তারা বলেন এবার এখন পর্যন্ত এ ছটাকও ধান খরিদ করতে পারেনি। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে কিনা তারা বলতে পারছেনা

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com