আহমেদ সাজু (সখীপুর) টাঙ্গাইল, কালের খবর :
টাঙ্গাইলের সখীপুরে নিয়ম- নীতির তোয়াক্কা না করে সংরক্ষিত সামাজিক বনাঞ্চলের ভিতরে গড়ে ওঠেছে প্রায় ৬০টি অবৈধ করাতকল। দিন-রাত শাল গজারিসহ সামাজিক বনায়নের কাঠ দেদারসে চেরাই করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক করাতকল মালিক বলেন,বন বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়মিত মাসোয়ারা দিয়েই স্থানীয় বিভিন্ন দলের নেতা ও প্রভাবশালীদের নামে বেনামে গড়ে তোলা হয়েছে ওইসব অবৈধ করাতকল বলে অভিযোগ রয়েছে। সংরক্ষিত সামাজিক বনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপনের আইন না থাকলেও সখীপুরে বনের ভেতরেই চলছে এসব করাতকল। এতে প্রতিমাসে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সামাজিক বনায়নের প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের কাঠ উজাড় হচ্ছে। এসব অবৈধ করাতকলের দাপটে বন্ধ হওয়ার পথে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে গড়ে ওঠা ৪৬টি বৈধ করাত কল।
জানা যায়, টাঙ্গাইলের উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক বনায়ন ঘেষে অবৈধভাবে প্রায় ৬০টি করাত কল গড়ে তোলা হয়েছে। আর বৈধভাবে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে গড়ে ওঠেছে ৪৬টি করাতকল। অবৈধ করাত কল নিয়ে বিভিন্ন সময় টেলিভিশন ও পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন করা হলে, চলে বন বিভাগের নামমাত্র অভিযান। কিছুদিন যেতে না যেতেই বন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আবার তা চালু করা হয়। সংরক্ষিত বনের পাশে করাতকল গড়ে তুলে যেভাবে দিনে রাতে নির্বিচারে গাছ কেটে চিড়াই এবং পাচার করা হচ্ছে অল্প দিনেই ঐতিহ্যে ভরা সখীপুর থেকে শাল-গজারি ও সামাজিক বনায়ন ধ্বংস হয়ে যাবে। আর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে পরিবেশের উপর।
অবৈধ করাতকলগুলো উচ্ছেদ করা হলে, বৈধভাবে গড়ে উঠা করাত কলগুলো ভাল ভাবে চলতে পারবে। ফলে এ ব্যবসার সাথে জড়িত লোকজন সুফল ভোগ করতে পারবে। তাই দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এই সব অবৈধ করাত কল বন্ধ করতে হবে। অবৈধ করাত কলগুলোতে দিনরাত সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে চিরাই করে বিক্রি করছে। এতে করে বনের গাছ দিন-দিন কমে যাচ্ছে । এভাবে গাছ চুরি চলতে থাকলে এক সময় শাল-গজারি ও সামাজিক বনায়নের অসিস্ত্ব হারিয়ে যাবে।
উপজেলা বৈধ করাতকল মালিক সমিতির সভাপতি জিন্নত আলী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক একই সুরে বলেন, সরকারি সকল ধরনের নিয়মকানুন মেনে লাইসেন্স নিয়ে গড়ে তোলা ৪৬টি করাতকলগুলো অবৈধ করাত কলের দাপটে প্রায় বন্ধের পথে। তাই,অবৈধ করাতকল গুলো উচ্ছেদের দাবি জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ও বন কর্মকর্তা বরাবর
লিখিত আবেদন করেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ করেন। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অচিরেই অবৈধ করাতগুলো উচ্ছেদের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সামাজিক বনায়ন বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ফারজানা আলম বলেন, সখীপুরের বেশির ভাগ এলাকা জুড়েই সংরক্ষিত ও সামাজিক বনায়ন। বিধি বহিঃর্ভূতভাবে গড়ে ওঠা করাতকল মালিকদের বিরুদ্ধে অচিরেই অভিযান চালানো হবে।
টাঙ্গাইল বিভাগীয় বনকর্মকর্তা বন সংরক্ষক ( ডিএফও) মো. সাজ্জাদুজ্জামান সখীপুরে গড়ে ওঠা অবৈধ করাত কলের কথা স্বীকার করে বলেন, বনবিভাগের জনবল সংকটের কারণেই অবৈধভাবে গড়ে উঠা করাত কলগুলো উচ্ছেদ করা যাচ্ছে না। তবে এসব অবৈধ করাতকলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে খুব দ্রুতই মালিকদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন।
অফিস : ৪৪-ক, অতিশ দীপঙ্কর রোড, মুগদা, ঢাকা । সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএস ভবন, ১২০/এ মতিঝিল, ঢাকা
মোবাইল : ০১৭৫৩-৫২৬৩৩৩ ই-মেইল : dainikkalerkhobor5@gmail.com
কারিগরি সহযোগিতায় ফ্লাস টেকনোলজি