ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
বিশেষ প্রতিবেদক, কালের খবর :
রাজশাহীর চারঘাটের সরদহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার আব্দুস সাত্তারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ভূমি উন্নয়ন কর দিতে আসা জমির মালিকদের কাছে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গতকাল শনিবার জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ দেন।
ওই আদেশে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, আব্দুস সাত্তার ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের ক্ষেত্রে দাখিলায় উল্লিখিত টাকার চেয়ের বেশি পরিমাণ টাকা অনৈতিকভাবে দাবি করেছেন। সরকার যেখানে ডিজিটেইজডের মাধ্যমে হয়রানি ছাড়াই ভূমি সংক্রান্ত সকল সেবা প্রদান করছে, সেখানে তিনি জোরপূর্বক অতিরিক্ত টাকা আদায়ের চেষ্টা করছেন। যা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর ৩(খ) ও ৩(ঘ) অনুযায়ী অসদাচরণ ও দুর্নীতির শামিল। এতে জেলা প্রশাসনের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। তিনি চাকরিতে বহাল থাকলে তদন্ত ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে প্রভাব খাটানোর আশঙ্কা রয়েছে। তবে বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি প্রচলিত বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা পাবেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার আব্দুস সাত্তারের ঘুষ নেওয়ার তিনটি ভিডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ নিয়ে আজকে দৈনিক আমাদের সময়সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, তার টেবিলের সামনে টাকা হাতে নিয়ে বসে থাকা সেবাগ্রহীতাকে তিনি বলছেন, ‘মাত্র ৯০০ টাকা দিলে হবে না। গরিব মানুষও এর চেয়ে বেশি দিছে। আর আপনি তো বড়লোক। মার্চেন্ট মানুষ। ৯০০ টাকা গুণে দিছেন, এটা কেমন কথা হলো!’
এক ব্যক্তি চারঘাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস থেকে তদবির নিয়ে আসায় তহশিলদার আব্দুস সাত্তার চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি ধমকের সুরে বলেন, ‘কমিশনার অফিস থেকে ফোন করান কেন? এই অফিসে লোক নাই? সাত দিন কাজ আটকাতে হয়। তাহলে বুঝবা।’
দ্বিতীয় ভিডিওতে দেখা যায়, তার টেবিলের সামনে বসে থাকা সেবাগ্রহীতাকে চার হাজার টাকার সঙ্গে আরও অতিরিক্ত ৫০০ টাকা দিতে বলছেন। তা না হলে খাজনার চেক কাটবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন তহশিলদার সাত্তার।
তৃতীয় ভিডিওতে দেখা যায়, তহশিলদার সাত্তার সেবাগ্রহীতাকে অফিসের বাইরে নিয়ে গাছতলায় দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। কথা বলার ফাঁকে কয়েক দফায় তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে পকেটে রাখছেন।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলছেন, তহশিলদার সাত্তারের চেয়ে ওই অফিসে পিয়ন কুদরত আলীর প্রভাব বেশি। প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতার ‘নেক নজর’ থাকায় ভূমি অফিসে দাপটের সঙ্গে চলেন তিনি।
তবে মাস দুয়েক আগে ওই অফিসে যোগ দেন সাত্তার। তহশিলদার পদে যোগ দিয়েই কুদরতের লেনদেনের হাটে হানা দিয়েছেন সাত্তার। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল তাদের মাঝে। এরই মধ্যে ফাঁস হলো সাত্তারের ঘুষ নেয়ার ভিডিও।
অফিস : ৪৪-ক, অতিশ দীপঙ্কর রোড, মুগদা, ঢাকা । সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএস ভবন, ১২০/এ মতিঝিল, ঢাকা
মোবাইল : ০১৭৫৩-৫২৬৩৩৩ ই-মেইল : dainikkalerkhobor5@gmail.com
কারিগরি সহযোগিতায় ফ্লাস টেকনোলজি