সাজাপ্রাপ্ত নেতা দেশকে কী দিতে পারেন ?
আবেদ হোসাইন, যশোর প্রতিনিধি, কালের খবর :
৫০ বছর আগে যশোরবাসি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে স্থানে জনসমুদ্রে ভাষণ শুনেছিলেন, সেখানেই ২৪ নভেম্বর জন সমুদ্রে ঐতিহাসিক জনসভায় ভাষণ দিলেন গনতন্ত্রের মানস কন্যা, দেশ উন্নয়নের মডেল, দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। শামসুল হুদা স্টেডিয়ামের ৪৮০০ বর্গ ফুটের নৌকার আদলে তৈরি বিশাল মঞ্চে বিকাল পৌনে তিনটায় দাঁড়িয়ে ভাষণে তিনি দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন ও অগ্রগতির এবং তার সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন। যশোর জেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আয়োজিত এ জনসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলাম মিলন।
তরুণ প্রজন্ম দেশনেত্রীকে এক নজর দেখার জন্য সকাল থেকে খুলনা বিভাগের হাজার হাজার নেতাকর্মী শত শত মিছিল নিয়ে জনসভায় যোগ দেন। পুরো যশোর শহর জনসমুদ্রে পরিণত হয়। ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে যায় পুরো শহর।আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এটিই প্রধানমন্ত্রীর প্রথম জনসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যের শুরুতে পঁচাত্তরের করূন ইতিহাস বলতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন বিএনপির প্রধান খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে দিয়েছেন। সে কারণে তিনি আজ সাজাপ্রাপ্ত। এই সাজাপ্রাপ্ত নেতা দেশকে কী দিতে পারেন বলেন? উপস্থিত জনতার উদ্দেশে এই প্রশ্ন রাখেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়ন করেছি। যশোরে আমাদের সময়ে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আমরা কৃষকের সব রকম সুযোগ করে দিয়েছি। ১০ টাকায় আজ কৃষক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে।’আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারে ছিল আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়বো। এই যশোর থেকেই আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সর্বপ্রথম এখানে আইটি পার্ক হয়েছে।
রিজার্ভ নিয়ে সমালোচকদের জবাব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে এখন রিজার্ভ নিয়ে নানা সমালোচনা করছে। অথচ আমাদের সরকার রিজার্ভ রেকর্ড পরিমাণ বাড়িয়েছে। আর কোনো সরকার রিজার্ভ বাড়াতে পারেনি। পর্যাপ্ত রিজার্ভ হাতে রেখেই সব কাজ করছি আমরা। রিজার্ভের কোনো সমস্যা নেই, আমাদের সব ব্যাংকে পর্যাপ্ত টাকা রয়েছে। সামনের দিনে কোনো সমস্যা হবে না।
রিজার্ভ নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা শুনছি। অনেকে প্রশ্ন করেন রিজার্ভ গেলো কোথায়? আমরা তো রিজার্ভ অপচয় করিনি। মানুষের কল্যাণে কাজে লাগিয়েছি। জ্বালানি তেল কিনতে হয়েছে, খাদ্যশস্য কিনেছি। বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেন,যশোর মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা হাসপাতাল নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। দ্রুতই সেখানে হাসপাতাল নির্মাণ কাজ শুরু হবে। আর স্টেডিয়ামের অবস্থা খুব খারাপ। জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ এটাকে আমরা ১১ স্তর বিশিষ্ঠ স্টেডিয়াম করে দেবো।’
তিনি বলেন,অভয়গরে ইপিজেট করে দিচ্ছি। সেখানে ৫০০ একর জমি নেয়া হয়েছে। সেখানে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে। যুব সমাজের জন্য আমরা অনেক কিছু করেছি। শুধু চাকরি খুজলে হবে না। কর্মস্থান ব্যাংক করে দিয়েছি। জামানত ছাড়া ঋণ পাওয়া যাবে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। কেউ বেকার থাকবে না। কেউ কিছু না কিছু করতে পারবে। আমরা সেটা করে দিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর পর মধুমতী সেতু হয়েছে। ছিয়ানবব্বই সালে নড়াইল সড়ক করে দিয়েছিলাম। এখন ঢাকার সঙ্গে নড়াইল ও যশোরের সরাসরি যোগাযোগ হয়েছে।
যশোরের শিল্পশহর নওয়াপাড়ায় নদীবন্দর হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বন্দর বিএনপি বন্দ করে দিয়েছিল। আমরা আবার চালু করেছি। এর সুবিধা পাচ্ছে যশোরের মানুষ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে আগামী নির্বাচনে আওয়ামীকে আবার ক্ষমতায় আনার জন্য সবার কাছে ভোট চান।
এর আগে,সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমির প্রেসিডেন্ট প্যারেডে যোগ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বিএএফ একাডেমিতে পাসিং আউট কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেছেন।
নতুন ক্যাডেটদের দেশ ও দেশ মাতৃকার প্রতি দায়িত্ববোধে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা বীরের জাতি। বিশ্ব দরবারের মাথা উঁচু করে চলবো এটাই আমাদের লক্ষ্য। বিমান ও সশস্ত্র বাহিনী এখন আরও বেশি আধুনিক, শক্তিশালী ও চৌকস বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ।
অফিস : ৪৪-ক, অতিশ দীপঙ্কর রোড, মুগদা, ঢাকা । সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএস ভবন, ১২০/এ মতিঝিল, ঢাকা
মোবাইল : ০১৭৫৩-৫২৬৩৩৩ ই-মেইল : dainikkalerkhobor5@gmail.com
কারিগরি সহযোগিতায় ফ্লাস টেকনোলজি