একই সঙ্গে মাদকাসক্ত অপ্রাপ্তবয়স্ক-অদক্ষ চালকের দৌড়াত্ম্যও বাড়ছে। কিছুতেই কমছে না মাদকের আগ্রাসনসহ নানা অপরাধ। এখানে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে মাদকসেবীর সংখ্যাও। তবে এলাকাবাসীসহ অভিজ্ঞমহলের অভিমত সর্বত্রই অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হচ্ছে পুলিশ অপরাধীদের মদদ দিচ্ছে। অভিযোগ পুলিশের সঙ্গে সখ্যতা ছাড়া এভাবে নিয়ন্ত্রণহীন দৃশ্যমান অপরাধ সংঘঠিত হওয়ার কোনো অবকাশ নাই। আর প্রশাসনের যথাযোগ্য ভূমিকার অভাবেই ডেমরায় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় প্রতিনিয়ত নানা অপরাধ দিন দিন বেড়েই চলেছে।
জানা গেছে, গত ১৭ জুন শুক্রবার সকালে কোনাপাড়া বাদশা মিয়া রোড এলাকায় রাকিব রহমান রকি (৩৫) নামে এক যুবককে চোর সন্দেহে পিটিয়ে ও ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ডেমরা থানায় শুক্রবার রাতেই হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শাহিন মিয়া (২৫) ও নাজমুল (২৪) নামে দুজনকে আটক রেখে বাকি খুনিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে ডেমরা থানা পুলিশ।
এদিকে গত ১৪ মে বিকালে রাষ্ট্রায়ত্ব করিম জুট মিলের পুকুরের পশ্চিমপাড় থেকে অজ্ঞাত এক নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে ডেমরা থানা পুলিশ, যার পরিচয় শনাক্ত হয়নি এখনো। গত ১০ মে পূর্ব বক্সনগর নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ মো. শাহজাহান ঢালী নামে এক ট্রাক চালকের লাশ উদ্ধার করেছে। বিষপানে ও অন্ডকোষ থেতলে দিয়ে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে মৃতের প্রথম স্ত্রীর সন্দেহ হয় দ্বিতীয় স্ত্রীর ওপর। যার রহস্য এখনো জানা যায়নি। গত ২৩ মার্চ ডেমরায় ছোট পাইটি এলাকায় ভাগিনার চিকিৎসার জন্য রাখা ১০৩০ টাকা চুরি করতে বোনের ঘরে এসে রবিন নামে এক ব্যক্তি তার আপন ভাগিনা ওমর ফারুককে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।
আরও দেখা গেছে, ২৯ জানুয়ারি ৪নং গেট রাস্তার উপর থেকে রাত ৩টার দিকে মো. সাইফুল ইসলাম নামে এক ডাম্প ট্রাক চালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে; যার ক্লু আজ পর্যন্ত বের হয়নি। গত ২৭ ডিসেম্বর নওগাঁ থেকে ডেমরায় বেড়াতে এসে গভীর রাতে সোহেল রানা নামে এক যুবক খুন হয়। বড়ভাঙ্গায় চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় মিন্টু নামে এক কাপড়ের ব্যবসায়ীকে গত ২২ ডিসেম্বর রাতে স্থানীয় মোহাম্মদ আলী গ্রুপের সন্ত্রাসীরা ওপেন লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গত ১ ডিসেম্বর রাতে ডেমরায় মো. মামুন নামে এক যুবক তার স্ত্রী মোছা. চাম্পা আক্তারকে হত্যা করে লাশ একটি হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়েছেন। গত ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে পরকীয়ার জেরে স্টাফ কোয়ার্টার থেকে আঞ্জুমান আরা মিতু নামে আরেক গৃহবধূ তার স্বামীর মাধ্যমে অপহরণের পর খুন হন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর দুপুরে ডেমরা-রামপুরা সড়কে পাশে স্নিগ্ধা নার্সারির পেছন থেকে শ্বাসরোধে খুন হওয়া মো. হাসান নামে এক অটোরিকশাচালককের লাশ উদ্ধার করা হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, ডেমরার প্রতিটি এলাকায় প্রধান ও অভ্যন্তরীণ সড়কে চলছে নিষিদ্ধ সব যানবাহন, হাজার হাজার ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা ও মিশুক, সড়কের দুপাশ দখল করে অবৈধ দোকানপাট ও নানা অস্থায়ী স্থাপনাগুলো দেদারছে চলছে চাঁদার বিনিময়ে। আর এসব চলছে ওপেন সিক্রেটভাবে চলছে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় প্রশাসনের মদদে। ষ্টাফ কোয়ার্টার ডেমরা-রামপুরা সড়কে সিটি টোলের নামে পরিবহণ থেকে ওপেন চাঁদাবাজি চলছে। এদিকে কোনাপাড়া-ফার্মের মোড় প্রধান সড়কের পাশে অবৈধভাবে বসানো প্রাইভেটকার স্ট্যান্ডটিও দৈনিক ও মাসোহারার ভিত্তিতে সরাসরি পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এসব বিষয়ে ডেমরা থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম, ডেমরা থানা এলাকায় আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে এটা আমি বলব না বরং আমাদের থানায় পুলিশের আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। যারা অপরাধ দমনে তৎপর রয়েছে। বর্তমানে যেকোনো বিষয়ে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। আর সড়কের দুপাশ অবৈধ দখলসহ চাঁদাবাজির বিষয়গুলো আমার জানা না থাকলেও এসব বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তবে সড়কে চাঁদাবাজির বিষয় দেখবে ট্রাফিক বিভাগ। আর আইন শৃঙ্খলার বিষয়ে প্রশাসনের সব সময় নজরদারি থাকে। নিয়মিত ডিউটিও চলছে। তবে চাঁদাবাজির কারা জড়িত এসব বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ আমাদের কাছে নেই।
অফিস : ৪৪-ক, অতিশ দীপঙ্কর রোড, মুগদা, ঢাকা । সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএস ভবন, ১২০/এ মতিঝিল, ঢাকা
মোবাইল : ০১৭৫৩-৫২৬৩৩৩ ই-মেইল : dainikkalerkhobor5@gmail.com
কারিগরি সহযোগিতায় ফ্লাস টেকনোলজি