আবেদ হোসাইন , যশোর সিটি প্রতিনিধি, কালের খবর : যশোরে গত কুড়িদিনে আন্তর্জাতিকমানের পাঁচ সহস্রাধিক ই-পাসপোর্ট ছাপা হয়েছে। খুলনা বিভাগের দশ জেলার মানুষ এ সুবিধা ভোগ করছে।
বাংলাদেশের ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানসহ অন্যান্য দেশে এ জাতীয় পাসপোর্ট ছাপা হয় না বলে সূত্রটি জানিয়েছে। চলতি মাসেই যশোর পাসপোর্ট অফিসে চার হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দশ বছর মেয়াদি বিভাগীয় এ কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে।
যশোর পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, দেশে হাতে লেখা পাসপোর্টের কার্যক্রম শেষ হবার পর শুরু হয় মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি)। ২০২০ সালের জুন মাস নাগাদ শেষ হয়ে যায় ডিজিটাল এ পাসপোর্টের কার্যক্রম। এরপর দেশ ই-পাসপোর্টের যুগে প্রবেশ করে। বিশ্বের ১২০টি দেশে বর্তমানে ইলেক্ট্রনিক্স পাসপোর্টের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমে প্রথম। এ তালিকায় বাংলাদেশ সারাবিশ্বের মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে। এ কারণে ই-পাসপোর্টে বাংলাদেশের নাম লাল রঙে ছাপা রয়েছে। অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি না থাকায় অন্যান্য দেশের ই-পাসপোর্টে সে সব দেশের নাম কালো রঙে ছাপা হয় বলে সূত্রটি জানিয়েছে।
যশোর অফিস সূত্রে জানা যায়, স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালের ২৮ জুন যশোর অফিসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের শুরু হয়। এরপর চলতি বছরের গত ৪ অক্টোবর যশোর অফিসে ই-পাসপোর্ট ছাপা কার্যক্রম শুরু হয়। কুড়িদিনে যশোরে পাঁচ সহস্রাধিক ই-পাসপোর্ট ছাপা হয়েছে। এখানে গড়ে প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয়শ’ পাসপোর্ট ছাপা হচ্ছে।
এদিকে, বিভাগের দশ জেলার পাসপোর্ট যশোরে ছাপা হওয়ার কারণে এ অঞ্চলের মানুষ সুবিধা ভোগ করছে। তাদেরকে আর ঢাকার অপেক্ষায় বসে থাকতে হচ্ছে না। যশোর থেকে মুদ্রণ করা পাসপোর্ট স্ব স্ব জেলায় পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। অবশ্য এ পাসপোর্টের জন্য হাতে লেখা কাগজের ব্যবহার নেই বললেই চলে। পুলিশ ভেরিফিকেশন ও টাকা জমা থেকে শুরু করে এ সংক্রান্ত সবকিছুই করা হয় অনলাইনে।
ই-পাসপোর্ট হলো একটি বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট, যাতে এমবেডেড ইলেট্রনিক্স মাইক্রোপ্রসেসর চিপ রয়েছে। এ চিপের মধ্যে রয়েছে বায়োমেট্রিক তথ্য যা পাসপোর্টধারীর পরিচয় প্রমাণের জন্য ব্যবহার করা যায়। এতে রয়েছে ব্যবহারকারীর একাধিক ছবি, দশ আঙ্গুলের ছাপ, চোখের আইরিশসহ তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক যাবতীয় তথ্য। যার মাধ্যমে পাসপোর্টধারীকে সহজে শনাক্ত করা যায়। এ কারণে পাসপোর্ট জালিয়াতির কোন সুযোগ নেই।
এ ব্যাপারে যশোর পাসপোর্ট অফিসের উপ পরিচালক মোহাম্মদ নূরুল হুদা সকালের ডাককে বলেন, ৪ অক্টোবর থেকে যশোর পাসপোর্ট অফিসে ছাপা সংক্রান্ত বিভাগীয় কার্যক্রম শুরু হয়। পাসপোর্ট ছাপার যে কার্যক্রম আগে ঢাকায় হতো, সেটি এখন থেকে যশোরে করা হচ্ছে। মাঝে একটু সমস্যা হলেও বর্তমানে স্বাভাবিক নিয়মে যশোরে পাসপোর্ট মুদ্রনের কাজ চলছে ।