প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪, ৪:১৩ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ১৬, ২০২১, ১১:৪৪ এ.এম
যশোরের ভৈরব নদ খননে গচ্চা ৩শ’ কোটি টাকা। কালের খবর
আবেদ হোসাইন, যশোর সিটি প্রতিনিধি, কালের খবর : যশোরের ভৈরব নদ খননে গচ্চা প্রায় ৩শ’ কোটি টাকা। খননের নামে বিপুল পরিমাণ এ টাকা লুটপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনা ও সৌন্দর্য্য বর্ধন কিছুই উপভোগ করতে পারলো না যশোরবাসী।
ভৈরব নদের চেহারা আগের মতই রয়ে গেছে। অবশ্য এ কাজে সুবিধা হয়েছে দখলদারদের। মাটি কেটে দু’পাড় উঁচু করায় পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাসহ দখলদাররা তাদের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এদিকে, প্রকল্পের মেয়াদ আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
যশোর শহরের উন্নয়ন ও সৌন্দর্য্য বর্ধনে ভৈরব নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে খননের দাবি ছিল যশোরবাসীর দীর্ঘদিনের। এ দাবির প্রতি সহমত প্রকাশ করে সরকার ২০১৬ সালে এ প্রকল্প পাস করে। এ বছরই ২৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচ বছর মেয়াদী ‘ভৈরব রিভার বেসিন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পের’ এ কাজ শুরু হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ৯২ কিলোমিটার নদ খনন করা হয়। ইতোমধ্যে নদের উজান ও ভাটির ৮০ কিলোমিটারের বেশি খনন কাজ শেষ হয়েছে। জটিলতা চলছে শহরের নীলগঞ্জ থেকে কাঠেরপুল-দড়াটানা হয়ে বিরামপুর অংশের কাজ নিয়ে। সে জটিলতায় গত প্রায় দু’বছর যাবৎ কেটে গেল।
সূত্র জানায়, যশোরের আলোচিত ভৈরব নদ খননে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ শহরের কাঠেরপুল থেকে বিরামপুর অংশের চার কিলোমিটার নিয়ে শুরু থেকেই বিপাকে পড়ে। বার বার টেন্ডার আহবান করলেও কেউ অংশ গ্রহণ করেনি। শেষমেষ পাঁচ দফা দরপত্র আহ্বানের পর ১১ কোটি ১৬ লাখ ২৬ হাজার ৯৯৫ টাকা ব্যয়ের এ কাজ পায় মেসার্স এসএস এন্ড এমটি (জেভি)। এ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা গোপালগঞ্জ শহরের পাঁচুরিয়া এলাকার মধুমতি সুপার মার্কেট। শহরের কাঠেরপুল থেকে বিরামপুর পর্যন্ত নদের মোট চার কিলোমিটার খননের গড় গভীরতা ২.৭৫ মিটার ও গড় প্রশস্থ হবে ৪৫ মিটার টপ টপ। এ খনন কাজ শুরুর তারিখ ছিল ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট ও কাজ শেষ হবার তারিখ বেধে দেয়া ছিল ২০২০ সালের ২০ জুন। কিন্তু সে মেয়াদে কাজ শেষ না হওয়ায় সময় বাড়িয়ে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু আজো সেই কাজ শেষ হয়নি। কখনো থেমে আবার কখনো দ্রুতগতিতে খনন চললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। নদে পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টিপাতসহ নানা অজুহাতে কাজ বন্ধ রাখে ঠিকাদার।
এদিকে, ভৈরব নদ খননের এ অবস্থা জানতে পেরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনা বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম ২০২০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি নদ পরিদর্শন করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এদিন বিকেলে তিনি যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউজে খনন কাজের ঠিকাদার, দপ্তরের কর্মকর্তা ও নাগরিক অধিকার আন্দোলন নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করেন। এসময় তিনি ঠিকাদারকে সাফ জানিয়ে দেন, আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ভৈরব নদ খননের গোটা কাজ শেষ করতে হবে। নতুবা তাদের কাজের অর্ডার বাতিল করে পুন:টেন্ডার আহবান করা হবে।
এদিকে, ভৈরব নদ খনন নিয়ে যশোর শহরবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তারা বলেছেন, সরকারের প্রায় তিনশ’ কোটি টাকা ভৈরব নদে গচ্চা গেছে। এর সুফল মানুষ পায়নি। অহেতুক খননের নামে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। নদ খনন ও সৌন্দর্য্য বর্ধণ প্রক্রিয়া এখন প্রশ্নবিদ্ধ। বর্তমানে নদ জুড়ে রয়েছে ময়লা ও কচুরিপানার স্তুপ। একইসাথে শুরু হয়েছে দখলের উৎসব।
অফিস : ৪৪-ক, অতিশ দীপঙ্কর রোড, মুগদা, ঢাকা । সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএস ভবন, ১২০/এ মতিঝিল, ঢাকা
মোবাইল : ০১৭৫৩-৫২৬৩৩৩ ই-মেইল : dainikkalerkhobor5@gmail.com
কারিগরি সহযোগিতায় ফ্লাস টেকনোলজি