রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ০৮:০৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
সোনামসজিদ সীমান্তে বিদেশী পিস্তল-গুলিসহ যুবক আটক। কালের খবর বাংলাদেশ সাংবাদিক ক্লাবের উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী ও চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি গঠন সভা অনুষ্ঠিত। কালের খবর সুন্দরগঞ্জে মীরগঞ্জ শাখার জনতা ব্যাংক অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টার প্রতিবাদে দোকান মালিক,গ্রাহকদের মানববন্ধন। কালের খবর মিশনে যাওয়া হলনা সেনা সদস্য সাইফুর রহমানের। কালের খবর প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি,কিশোরগঞ্জে সেই বিএনপি নেতা চাঁদের বিরুদ্ধে মামলা। কালের খবর ভূমিসেবা সপ্তাহ ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা তাড়াশে পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী আবদুস সালাম বি.এস.সি। কালের খবর সিদ্ধিরগঞ্জ থানা মৎস্যজীবীদের সভাপতি শাহ আলম সাউদের উদ্যোগে ২০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত। কালের খবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকির, প্রতিবাদে সুন্দরগঞ্জে বিক্ষোভ সমাবেশ। কালের খবর শিগগিরই সরকার পতনের আন্দোলনের ঘোষণা করা হবে : গয়েশ্বর চন্দ্র রায় । কালের খবর
ফিলিপাইন জাতের আখ চাষে চেয়ারম্যানের সফলতা। কালের খবর

ফিলিপাইন জাতের আখ চাষে চেয়ারম্যানের সফলতা। কালের খবর

সাঈদুর রহমান,ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি, কালের খবর : যোগাযোগ প্রযুক্তি আর আধুনিকতার ছোয়ায় বদলে যাচ্ছে দেশের কৃষি। নিত্য নতুন ফল, ফসল আর সবজি চাষে সাবলম্বি হচ্ছে কৃষক। ফলে এসব চাষের দিকে ঝুকছে শিক্ষিত তরুণ, যুবক ও জনপ্রতিনিধিরা। এদেরই একজন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপু। এ বছর তিনি ৬ বিঘা জমিতে ফিলিপাইন জাতের গেন্ডারী আখের চাষ করেছেন। এবারই প্রথম উপজেলায় এ জাতের আখ চাষ করে হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে জমির আখ ১২ থেকে ১৫ ফিট লম্বা হয়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার মানুষ তার আখ চাষ দেখতে আসছেন।
তার দাবি, এখানকার মাটি বিদেশী এ জাতের আখ চাষের শতভাগ উপযোগী। সারাদেশের বাজারে চাহিদা, ফলন, দাম সবই ভালো এবং অধিক লাভজনক। এ জাতের আখ চাষ বৃদ্ধি পেলে এলাকার কৃষি অর্থনীতি বদলে যেতে পারে।
চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপুর গ্যান্ডারী ক্ষেতে গেলে দেখা যায়, হালকা খয়েরি রংয়ের ১২ থেকে ১৫ ফিট লম্বা মোটা মোটা আখগুলো সারিবদ্ধভাবে সোজা দাঁড়িয়ে আছে। নুইয়ে পড়া ঠেকাতে প্রত্যেক সারির মাঝে মাঝে বাঁশের শক্ত খুঁটিতে মোটা জি-আই তারে বাধা হয়েছে। প্রতিটি লাইনের মাঝখান দিয়ে ভালোভাবে চলাফেরা করা যাচ্ছে। ক্ষেতের চারপাশ থেকে বেশ সাজানো গোছানো দেখা যাচ্ছে।
জনপ্রতিনিধি ও কৃষক আলী হোসেন অপু জানান, আমি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। নির্বাচিত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হলেও আমি জাত কৃষক পরিবারের সন্তান। যে কারনে কৃষি আমার রক্তে মিশে রয়েছে। জনসেবা আর রাজনীতির মধ্যে সময় করে কৃষি আবাদ করি। এবছর আমি অন্যান্য চাষের সাথে ছয় বিঘা জমিতে ফিলিপাইন জাতের গেন্ডারী আখের চাষ করেছি। এ জাতের আখ আমাদের দেশের আগেও বিভিন্ন জেলায় চাষ হয়েছে। তবে বীজ সংগ্রহ করতে না পারায় লাভজনক এ গ্যান্ডারী আখের চাষ কেউ করতে পারেননি। আমি ২০১৯ সালে চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার তিন্নাতপুর গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ক্ষেত থেকে প্রতিপিচ চারা ১০০ টাকা দরে একশত চারা কিনে আনি। পরের বছর ২০২০ সালে চারাগুলো বৃদ্ধি করতে মাত্র ৩ শতকের বীজতলায় স্বল্প পরিসরে চাষ করেন। সে বছর একটি আখ থেকে ২০/২৫ টি চারা পান। এখান থেকে আরও কিছু চারা বাড়িয়ে নেন। যা চলতি বছরের প্রথম দিকে দুই একর জমিতে বানিজ্যিকভাবে চাষ করেছেন। ৩৩ শতকের এক বিঘা জমিতে প্রায় ২৫’শ থেকে ২৮’শ চারা লাগে। সে হিসেবে নিজের ৬ বিঘা জমিতে চারা রোপনের পর বাকি চারা প্রতিপিচ ৫০ টাকা দরে বিক্রি করেন।
তিনি আরও বলেন, এ জাতের আখ কড়া মিষ্টি। প্রতিটি আখ ১৮ থেকে ২০ ফুট লম্বা হয়। প্রথম দিকে ছাড়া তেমন একটা খরচ নেই। কিন্ত অন্য ফসলের চেয়ে এটি অনেকটা সৌখিন ও লাভজনক চাষ। এলাকাতে অনেক কৃষক আগামীতে চাষ করবেন বলে চারা অর্ডার দিয়ে রেখেছেন। তিনি আরও বলেন, আমার আখের জমির পাশেই অবিস্থি মোবারকগঞ্জ চিনিকল। ফলে তাদের পূর্ব পুরুষেরা মাঠে চিনিকলের আওতায় বিভিন্ন জাতের আখের চাষ করে আসছেন। কিন্ত মুখে খাওয়া আখের তারা চাষ বুঝতেন না। অথচ এ এলাকার সকল বাজারে অন্য জেলা থেকে মুখে খাওয়া গ্যান্ডারী আখ এনে চড়া দামে বিক্রি হয়ে থাকে। প্রথমে তিনি ইউটিউব থেকে এই আখের জাত সম্পর্কে জেনে উৎসাহিত হন। শিয়াল এ আখের প্রধান শত্রু। এগুলোর হাত থেকে রক্ষা করতে ক্ষেতের চারপাশে মজবুত করে বেড়া দিতে হয়। এছাড়াও সার, সেচ, জিআই তারসহ যাবতীয় খরচ বাবদ বিঘা প্রতি প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। পরে আর তেমন একটা খরচ নেই বললেই চলে। অথচ প্রতি বিঘা হতে প্রায় আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকার আখ পাওয়া সম্ভব। আগামী দুই থেকে অড়াই মাস পর এই আখ বিক্রির উপযোগী হবে। প্রতি পিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে পাইকারী বিক্রি করতে পারবেন। আগামি বছর তিনি কমপক্ষে ৫ একর জমিতে এ আখ চাষ করবেন বলেও যোগ করেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিকদার মোহম্মদ মেহায়মেন আক্তার বলেন, আমি রায়গ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপুর গ্যান্ডারী আখ ক্ষেতে গিয়ে দেখেছি। ফলন ভালো হবে বোঝা যায়। তবে, পাশেই সুগার মিল থাকায় তারা আখ চাষ সম্পর্কে তারা ভালো জানবেন। এই আখ ভালো লাভজনক বলেও জানা তিনি।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com