মোঃ মুন্না হুসাইন তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি, কালের খবর : সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকের মুখে আনন্দের হাসি ফুটছে।
তাড়াশ ঐতিহ্যবাহী সাপ্তাহিক হাট ঘুরে দেখা যায় ভোর ৭ টা থেকেই বেচাকেনা শুরু হয়ে যায়। বাজারে কথা হয় রসুলদি ব্যাপারির সঙ্গে তিনি জানান প্রতিদিন খুব ভোর থেকেই বেচাকেনা শুরু হয়ে যায় তবে হাটের দিন (বৃহশস্পতি বার) বেশি জমে কারণ ঐদিন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই বেশি থাকে।
হাটের পাট বিক্রি করতে আসা আব্দুর কাদেরের সাথে কথা হয় তিনি বলেন পাট চাষে ব্যায় খুবই কম। এক বিঘা পাটে ব্যায় মাত্র পাঁচ / সাত হাজার টাকা। অপরদিকে এক বিঘা জমিতে প্রায় ৮/৯ মন পাট পাওয়া যায়। বর্তমানে তাড়াশের নওগাঁ হাটে পাটের বাজার ২৮০০ টাকা থেকে প্রকারভেদে ৩৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এখন মাঠে যেমন কৃষক ব্যাস্ত পাঠ কাটতে তেমনি বাড়িতে মহিলারাও এখন কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন পুরুষের সঙ্গে। মহেশরৌহালী গ্রাম ও হামকুড়িয়া গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, মহিলারাও পুরুষের সঙ্গে পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পানিতে পাট জাগ দেয়া হয়েছে আর রাস্তার উপর সারিবদ্ধভাবে মহিলারা গাছ থেকে পাট ছাড়াচ্ছেন। নিজেদের পাশাপাশি অনেকেই পাট কাঠির বিনিময়ে পাট ছাড়িয়ে দিচ্ছেন।
ওজুবা বেগম নামে একজন মধ্যবয়সীর সঙ্গে কথা হয়, যিনি অন্যের পাট ছাড়িয়ে দিচ্ছেন। তিনি জানান, কী আর করবো বাবা, আমাদের জন্য পাটকাঠি অনেক প্রয়োজনীয় বস্তু, তাই ছাড়াতে এসেছি। যতগুলো ছাড়াবো সবই আমার।
তবে আবারও পাটের সুদিন ফিরে আসছে। পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে পাট ও পাটজাত দ্রব্যে ব্যবহার বাড়াতে ভোক্তাদের আগ্রহী করা হচ্ছে। অপরদিকে পাট চাষে আগ্রহী করতে চাষিদেরকে সরকার থেকে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। গত বছর থেকে আবারও পাটের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন চাষিরা। মাঝখানে পাটের আবাদ কমলেও আবারও পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বাড়ানো সম্ভব হলে পাটের আবাদ আরো বৃদ্ধি পাবে।
তাড়াশ উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জনাবা লুৎফুন্নাহার বলেন, আমরা পাট চাষিদের প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। কৃষক পাট চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে এবং পাটের ন্যায্য মূল্যও পাচ্ছে। আমরা পাটের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে নিয়ে আসবো। গতবছর ২০১৯-২০ অর্থ বছরে তাড়াশ উপজেলায় ৩৩.৭০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়। কিন্তু এ বছর পাট চাষ লাভবান হওয়ায় কৃষকেরা পাট চাষের দিকে ঝুঁকছে এর ফলে ২০২০-২১ অর্থ বছরে পাট চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৪৫.৮০ হেক্টর জমিতে।
তিনি বলেন, পলিথিন ব্যবহারের পরিবর্তে সর্বক্ষেত্রে পাটের ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করছে। এতে আমাদের পরিবেশ রক্ষা পারে, পাশাপাশি পাটের হারানো ঐতিহ্য, গৌরব ফিরে আসবে।
অফিস : ৪৪-ক, অতিশ দীপঙ্কর রোড, মুগদা, ঢাকা । সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএস ভবন, ১২০/এ মতিঝিল, ঢাকা
মোবাইল : ০১৭৫৩-৫২৬৩৩৩ ই-মেইল : dainikkalerkhobor5@gmail.com
কারিগরি সহযোগিতায় ফ্লাস টেকনোলজি