বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন
মোঃ মুন্না হুসাইন তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি, কাের খবর : দিনের বেলায় থাকেন ঢোপ ঘরে। রাতে ঘুমাতে যান অন্যের বাড়িতে। তার বাবার বাড়ি ছিলোনা, স্বামীরও বাড়ি নেই। নিজের কোন ঘর নাই সহায় সম্বলহীন ৬২ বছর বয়সী মোছাঃ বেগমের। তিনি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘরের জন্য আকূল আবেদন করেছেন।
বেগমের স্বামী মোজাহার ছিলেন তাড়াশের নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ গ্রামের বাসিন্দা। তিনি অনেক বছর আগেই মারা গেছেন। সেই থেকে বেগম নওগাঁ হাট এলাকার এ বাড়ি-ও বাড়ি থাকছেন।
বেগম এ প্রতিবেদককে বলেছেন, তার সারাটা জীবন অন্য মানুষজনের বাড়িতে থেকেই কেটে গেল। যার সাথে বিয়ে হয়, সেও ছিলো অতি দরিদ্র ভূমিহীন। তার স্বামী বছর মেয়াদে যে সব গেরস্তের বাড়িতে মজুরের কাজ করতেন, সেই বাড়িতে তিনিও কাজের মানুষ হিসেবে থাকতেন। এভাবে কেটে গেছে তার সেকাল। আর এখনো তার দিন কাটে অন্যের ঢোপ ঘরে থেকেই।
বেগম আরো বলেন, দুবছর ধরে তিনি ঢোপ ঘরে থাকছেন। এখানে ঝড় বৃষ্টিতে ভীষণ কষ্ট হয়। বৃষ্টি হলে ঢোপ ঘরের চারপাশে পানি জমে জলাবদ্ধ হয়ে থাকে। আর ঝড়ের সময় মনে হয়, ঢোপ ঘরের সাথে যেন তাকেও উড়িয়ে নিয়ে যাবে। ঢোপ ঘরটি একেবারে উন্মুক্ত স্থানে বসানো রয়েছে। ফলে শীতের তীব্রতাও তাকে সইতে হয়।এদিকে শনেকা খাতুন নামে একজন গৃহবধূ জানিয়েছেন, বেগম রাতে তার বাড়িতেই থাকেন। বেগমের খোঁজ বা কোন খবর নেওয়ার মতো দুনিয়াতে কেউ নাই। তিনি মানুষজনের কাছ থেকে হাত পেতে খান। তার এমন অসহায়ত্ব ও অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্ট দেখে পরিচিত জনেরা দারুণ আপসোস করেন।
সরেজমিনে সোমবার সকালে দেখা গেছে, নওগাঁ এলাকার নওগাঁ শাহ শরীফ জিন্দানী (রহ:) মাজার মাঠের এক কোণায় বেগমের ঢোপ ঘর। সেখানে চারপাশে বৃষ্টির পানি জমে আছে। অনেকটা নির্বাক হয়ে ঢোপ ঘরের মধ্যে বসে আছেন বেগম। ঢোপ ঘরে পাতা তার একার সংসারে একটি পড়নের কাপর, পুঁতি বাতি ও ভাতের থালা ছাড়া তেমন কিছুই নেই। জানা গেছে, স্থানীয় রেজাউল করিম নামে এক যুবক ব্যবসা বাদ দিয়ে ঢোপ ঘরটি ফেলে রেখেছিলেন। তখন সেখানে বেগম আশ্রয় খুঁজে নেয়। তারপর থেকে ঐ যুবক মানবিক কারণে তাকে থাকতে দিয়েছেন। তাড়াশ
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল করিম বেগমকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।