শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৫ পূর্বাহ্ন
সাঈদুর রহমান,ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি, কালের খবর : ঝিনাইদহে মাত্র ২০ সেকেন্ডের ঘুর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে অর্ধশতাধিক কাচা ঘরবাড়ি। মঙ্গলবার (২৫ মে) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের আড়মুখী গ্রামে টর্নেডোর আঘাতে এসব কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙ্গে পড়ে। ঝড়ে ঘরের চালা ও টিন উড়তে থাকে। ঝড়ে এসব টিন গাছের মাথায় ঝুলতে দেখা যায়। ঝড়ে শত শত গাছের ডালপালা ভেঙ্গে লন্ডভন্ড হয়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্তরা পরিবারের সদস্যরা জানায়, ১৫ থেকে ২০ সেকেন্ডের ঝড়ে অতিবিষ্টির মধ্যে আড়মুখী কুটিপাড়া থেকে পশ্চিমপাড়া পর্যন্ত একটি বাতাসের ঘুর্ণি প্রায় দেড়শত মিটারের মত ব্যাস ধারন করে। প্রবল বেগে বয়ে যাওয়া ঝড়ে দুই কিলোমিটারের মধ্যে থাকা ঘরবাড়ি ও গাছপালা ধ্বংসস্তুপে পরিনত করে। অবশ্য একই গ্রামের অনেক প্রতিবেশিদের বাড়ি ও পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে ঝড়ের কোন প্রকার প্রভাব পড়েনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টর্নেডো গ্রামের উত্তর-দক্ষিণ থেকে মোড় নিয়ে পূর্ব পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়। কালো রুপ ধারন করে পাকাতে পাকাতে পশ্চিম দিকের পাশ^বর্তী কাজুলী গ্রামের দিকে অগ্রসর হয়ে হালকা হয়ে যায়। এতে গাছপালা ও কাচা ওআধাপাকা ঘরের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘরের আসবাবপত্র উড়ে গাছের ডালে বেধে গেছে। ঝড়ের কবলে পড়ে আজিজ বিশ্বাসের স্ত্রী ও একই গ্রামের আরো দুই শিশু দেওয়াল চাপা পড়ে। তাদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আড়মুখী গ্রামের বাবলু শেখ, বিল্লাল বিশ্বাস, শাহিনুর রহমান, টিপু, ফেটু বিশ^াস, আব্দুল্লাহ, জাহিদুল ইসলাম, আইনুদ্দিন, আকবর আলী, শিমুলে হোসেন, শাহিনুর রহমান, আজিজ বিশ্বাস, সলেমান মন্ডল, সিরাজ বিশ^াস, আসলাম উদ্দীন, ইলিয়াস হোসেন, আতিয়ার রহমান, আয়ুব মন্ডল, আসাদ আলী, হাসানুর রহমান, দোস্তর আলী, নাসির উদ্দীন, গফফার হোসেন, আলমগীর হোসেন, আকরাম আলী ও আজিজুর রহমানের পরিবারের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
নলডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবীর হোসেন জানান, মঙ্গলবার বিকেলে থেকেই হালকা বাতাসের সাথে বৃষ্টিপাত হয়। সন্ধ্যার একটু আগে হঠাৎ করেই আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায়। শুরু হয় ঝড়। ১৫ থেকে ২০ সেকেন্ড স্থায়ী এ ঝড়ে আড়মুখী গ্রামের কুটিপাড়া থেকে পশ্চিম পাড়া পর্যন্তÍ ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে। এতে অর্ধ-শত কাচা-পাকা বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। উপড়ে যায় শতশত গাছপালা। ঝড়ের কবলে পড়ে নারী ও শিশুসহ ৩ জন আহত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ ওই গ্রামের বাবলু শেখ বলেন, হঠাৎ করে ঝড় শুরু হলো। কিছু বোঝার আগেই ১৫ থেকে ২০ সেকেন্ডের মধ্যে গাছপালা উপড়ে গেল। বাড়িঘরে ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশে গেছে। একই এলাকার দোস্তর আলী বলেন, যাদের মাটির ঘর বা টিনের ঘর ছিল তাদের আর কিছুই নেই।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের সহযোগিতার জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও শুকনা খাবার দেওয়া হচ্ছে।