বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০১:২৩ পূর্বাহ্ন
মোঃ সাকিব মাহমুদ,রাজবাড়ী প্রতিনিধি, কালের খবর : ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় রাজবাড়ীর বেশিরভাগ নলকূপ দিয়ে উঠছে না পানি। এমনকি কোথাও কোথাও গভীর নলকূপেও পানি তোলা যাচ্ছে না। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা।
রাজবাড়ী সদর, পাংশা, কালুখালী, বালিয়াকান্দি ও গোয়ালন্দ উপজেলার ভেতর দিয়ে পদ্মা, চিত্রা, গড়াই, হড়াই, চন্দনাসহ বেশকিছু নদ-নদী বয়ে গেছে। কোথাও কোথাও পানি থাকলেও বেশির ভাগ নদীতে এখন জেগেছে চর। সুপেয় পানির তীব্র সংকটে এক দিকে রান্না ও গৃহস্থালি কাজে যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনি গৃহপালিত পশু-পাখির জন্যও মিলছে না পর্যাপ্ত পানি।
পানির প্রাকৃতিক উৎসগুলো ক্রমেই পানিশূন্য হয়ে পড়ছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে অতিরিক্ত দাবদাহ। যে কারণে জেলার প্রায় সব নলকূপই অকেজো হয়ে গেছে। পানি সংকটে মানুষ প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। জেলার পাঁচটি উপজেলাতেই এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য বিভাগ।
ভুক্তভোগীরা জানান, টিউবওয়েলে পানি থাকছেই না। অনেক চেপে পানি উঠাতে হচ্ছে। সেটাও পর্যাপ্ত নয়। এক জগ পানি তুলতে কমপক্ষে ৮০ থেকে ১০০ বার চাপ দিতে হচ্ছে। এ ছাড়াও পুকুর, জলাশয়ের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় গৃহস্থালির গৃহপালিত পশু-পাখির বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
পাংশার নলকূপ ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর জানান, তার শ্রমিকরা বিভিন্ন জায়গায় নলকূপ বসিয়ে থাকে। সাধারণত ২০ থেকে ২৪ ফুট মাটির নিচে পানির স্তর পাওয়া যায়। কিন্তু এখন নলকূপ স্থাপন করতে গিয়ে ৩২ থেকে ৪০ ফুট নিচে পানির লেয়ার মিলছে। তবুও পর্যাপ্ত পানি উঠছে না।
রাজবাড়ী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাদিয়া ফেরদৌসি বলেন, ‘এপ্রিল-মে এ দুই মাস শুষ্ক মৌসুমের পিক আওয়ার। অনাবৃষ্টি ও খড়ায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। ব্যক্তিপর্যায়ে সাধারণত ছয় নম্বর প্রযুক্তিতে নলকূপ স্থাপন করা হয়ে থাকে। এসব নলকূপ স্থাপনে খরচ অনেক কম হয়। শুষ্ক মৌসুমে এসব নলকূপে পানি পাওয়া যায় না। তবে বছরের অন্য সময়ে ভালোই পানি পাওয়া যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা বিভিন্ন জায়গার পানির স্তরের তথ্য সংগ্রহ করছি। এই সময়টা তথ্য সংগ্রহের উপযুক্ত সময়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের স্থাপন করা নলকূপের সংখ্যা ১৪ হাজার ৬৯৯টি। এসব নলকূপের বিষয়ে কোনো অভিযোগ নেই। চলতি বছরে প্রতিটি ইউনিয়নের জন্য ২৬টি করে মোট এক হাজার ৯২টি নলকূপ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এগুলো যথাসময়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় স্থাপন করা হবে।