শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের খবর :
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে এখনো ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে বসে নেই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদে আগ্রহী সম্ভাব্য প্রার্থীরা। নির্বাচনের আগেই তাদের প্রচার-প্রচারনা আর পোস্টা-ফেস্টুনে গ্রামে গ্রামে (সম্ভাব্য) প্রার্থীদের প্রচারণা জমে উঠেছে। দেশের প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোনয়ন পেতে চলছে তাঁদের দৌড়ঝাঁপ। আগে-ভাগেই ধরনা দিচ্ছেন জেলা-উপজেলার শীর্ষস্থানীয় নেতাদের কাছে।
নির্বাচনী উত্তাপ এবং প্রার্থীদের এমন দৌড়ঝাঁপ শুরু হলেও দুই দলেই এখনো প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়নি। মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রার্থী বাছাই নিয়ে উভয় দলে বিশৃঙ্খলা তৈরির আশঙ্কা করেছেন দল দু‘টির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচারণায় সরগরম গ্রামীণ জনপদ। গ্রামে গ্রামে গিয়ে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি ভোটারদের কাছে দোয়া চাচ্ছেন তাঁরা। এলাকার মসজিদ-মাদ্রাসা এবং গরীব-দু:খি মানুষের মাঝে বিলি করছেন আর্থিক সহায়তা। একইসাথে বিভিন্ন চিকিৎসা সেবা দিতেও ভুল করছেন না এসব প্রার্থীরা।
সম্প্রতি কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মসুয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে কথা হয় নানা শ্রেণি-পেশার বেশ কয়েকজনের সাথে। তাঁরা বলেন, শীত উপেক্ষা করে মসুয়া ইউনিয়নসহ কটিয়াদী উপজেলার একটি পৌরসভা আর ৯টি ইউনিয়ন। এসব ইউনিয়নে দিনরাত প্রচারণা চালাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে এলাকা। অনেকে নিজের ছবিসংবলিত নতুন বছরের ক্যালেন্ডার ছাপিয়ে ভোটারদের মধ্যে বিলি করেছেন। কেউ কেউ বিনা দাওয়াতেই হাজির হচ্ছেন বিয়েসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে। মুঠোফোনে খুদে বার্তায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও চলছে প্রচারণা। কথা হয় মসুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ২ বারের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান প্রয়াত ইদ্দিস আলীর ছোট ছেলে আল-আমিন আজাদে এর সাথে। তিনি এবার বাবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে বাবার মতো এলাকাবাসির কল্যানে নিজেকে বিলিয়ে দিতে চান। এরইমধ্যে মসুয়া ইউনিয়নের গরীব-দু:খি মানুষের কল্যানে কাজ শুরু করেছেন আল-আমিন আজাদ। মসজিদ-মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সম্ভাব্য এই চেয়ারম্যান প্রার্থী। নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারেও শতভাগ আশাবাদী তরুন এই সমাজসেবক। একইভাবে মসুয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান হতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো: আ: কুদ্দুস রতন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ প্রত্যাশা করছেন তিনি। স্কুল শিক্ষকের সন্তান হিসেবে তার বাবার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। তাছাড়া মো: আ: কুদ্দুস রতনও ছোট বেলা থেকেই বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ছাত্রদল-যুবদল ও মূল দল বিএনপির মসুয়া ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দীঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। এবার তিনি মসুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে দলীয় নেতাকর্মী ও এলাকার সকল পেশা-শ্রেনীর মানুষের সেবা করতে চান। কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার মসুয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী আল-আমিন আজাদ এবং বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী মো: আ: কুদ্দুস রতন এর মতো সারাদেশেই প্রচারনায় নেমেছেন বড় দুই দলসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীরা। তবে শেষ পর্যন্ত কারা নিজ নিজ দলের মনোনয়ন পাচ্ছেন তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে প্রতীক বরাদ্ধের আগ পর্যন্ত। এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান শাহজাহান বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনা পেলেই বাছাই শুরু এবং মাঠ জরিপের মাধ্যমে একক প্রার্থী নিশ্চিত করা হবে। কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলু রহমানও প্রার্থী বাছাই শুরু করতে কেন্দ্রের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন বলে জানান।