লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ড. আনোয়ার হোসেন খান এমপি বলেছেন, লক্ষ্মীপুরে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আগামী দিন থেকে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবো। এই লক্ষ্মীপুরে কোনো সাংগঠনিক বিভেদ থাকবে না। একে অপরের সহযোগী হয়ে সরকারের পক্ষে সম্মিলিতভাবে সাংগঠনিক ও স্থানীয় উন্নয়ন কাজে মনোবিষ্ট হবো। রাস্তা-ঘাট, সড়কপথ, নৌ-পথ, স্কুল-কলেজসহ সামগ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নে যে যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রেখে লক্ষ্মীপুরকে সমৃদ্ধ ও উন্নত জেলা হিসেবে গড়ে তুলব।
বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের এক বর্ধিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিতি থেকে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের বিষয় উল্লেখ করেন।
ড. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, রামগঞ্জে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর লক্ষ্মীপুর-রামগঞ্জ-হাজিগঞ্জের ২৪ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নের কাজ সম্পন্ন করেছি। যার জন্য বর্তমানে ঢাকা থেকে লক্ষ্মীপুর ও রামগঞ্জের যাতায়াত অনেক সহজ হয়েছে। যার সুবিধা পাচ্ছেন এখানকার বাসিন্দারা। এ কাজটির জন্য মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং দলীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে ব্যক্তিগতভাবে প্রস্তাব করলে তিনি অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে গুরুত্ব দিয়ে তা বাস্তবায়নের সুযোগ করে দেন খুব অল্প সময়ের মধ্যে। তাই তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই তাঁর আন্তরিক সহযোগিতায় রামগঞ্জে স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মন্দির, গ্রামীণ অর্থনীতি উন্নয়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করার সুযোগ হয়েছে।
রামগঞ্জের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, এ যাবত রামগঞ্জে ২০০ কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণ, ১০০টি প্রাইমারি স্কুলের ইতোমধ্যে ৪০টিতে আধুনিক ভবন নির্মাণ, একাধিক কলেজের উন্নয়নসহ অসংখ্য মসজিদ-মন্দির ও আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া বেসরকারিভাবে এখানে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ এগিয়ে চলছে।’ অচিরেই তা বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি।
বক্তব্যের শুরুতে স্বাধীনতাযুদ্ধের মহান শহীদদের, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব শহীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন ড. আনোয়ার খান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর দীর্ঘ ৪৭ বছর লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে আওয়ামী লীগের কোনো এমপি নির্বাচিত হয়নি। ৪৭ বছর পর এখানে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমাকে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়ায় আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। একই সঙ্গে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই রামগঞ্জের সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ ও মা-বোনদের প্রতি।
ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, আজকের সভায় উপস্থিত অতিথিদের মাধ্যমে লক্ষ্মীপুর থেকে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে কথা দিতে চাই, এই লক্ষ্মীপুরকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটিতে রূপান্তর করবোই। আমরা বিশ্বাস করি এখানে লক্ষ্মীপুরে আমরা সবাই এক এবং অভিন্ন, সেই বিশ্বাস থেকেই বলছি এখানে আওয়ামী লীগের একটি সুসংগঠিত সাংগঠনিক কাঠামো তৈরির মাধ্যমে দলকে গতিশীল করে তুলবো আমরা।
লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা। ছবি: প্রতিনিধি
সবশেষে তিনি মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে একটি কবিতা আবৃত্তি করেন, হে বীর, হে মহানায়ক, তোমাকে দেখিনি আমি...”
লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, লক্ষ্মীপুর সদর-৩ আসনের এমপি এ কে এম শাহজাহান কামাল, লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাজান মিয়া, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র এম এ তাহের প্রমুখ।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের সঞ্চালনায় জেলা কমিটির সব নেতা ও সদস্য, সব উপজেলা ও পৌর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ দলীয় বিভিন্ন নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।