সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমের জীবনের বড় একটি অংশই কেটেছে দেশের বাইরে। পড়াশোনার সুবাদে কানাডায় ছিলেন বহু বছর। সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে ছিল নিয়মিত যাতায়াত। সেখান থেকেই তাকে পেয়ে বসে ভয়ংকর সব নেশা।
দখলদারি ও চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ এবং রাস্তায় বের হয়ে চলাচলে ছিল তার নিজস্ব ‘সিগন্যাল ব্যবস্থা’। তার কথা না শুনলে শায়েস্তা করতে ছিল ‘টর্চার সেল’। বিভিন্ন সময়ে বাইরে বের হলে সঙ্গে রাখতেন ‘কমান্ডো নাইফ’, পিস্তলসহ অত্যাধুনিক অস্ত্র ও মদের বোতল।
আর এসবকে ইরফান বলছেন ‘হবি’ বা শখ। চকবাজারের রাজসিক প্রাসাদ ‘চাঁন সরদার দাদা বাড়ি’ থেকে র্যাবের হাতে আটকের পর ইরফান সেলিম সম্পর্কে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে।
এলাকাবাসীও এসব তথ্যের অনেক কিছুই নিশ্চিত করেন যুগান্তরকে।
এর আগে সোমবার রাতে সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী মোহাম্মদ জাহিদকে গ্রেফতার করে র্যাব।
শুরুতে ইরফানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক বছরের কারাদণ্ডের খবর জানালেও পরে তাকে দেড় বছর এবং জাহিদকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়ার কথা জানায় র্যাব।
এরপর রাত সাড়ে ১২টায় তাদের নেয়া হয় কারাগারে। সেখানে তারা কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এদিকে মঙ্গলবার নৌবাহিনী কর্মকর্তাকে মারধর ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ইরফান সেলিম ও জাহিদকে ‘শ্যোন অ্যারেস্ট’ দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে ধানমণ্ডি থানা পুলিশ।
এই আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আজ। এদিন রাত সোয়া ১১টায় চকবাজার থানায় ইরফান ও জাহিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে পৃথক চারটি মামলা করা হয় বলে জানায় র্যাব।
এছাড়া সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ডিবি পুলিশ এমপি হাজী সেলিমের প্রটোকল কর্মকর্তা এবি সিদ্দিক দিপুকে টাঙ্গাইল শহর থেকে গ্রেফতার করে। তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এর আগে এই মামলায় একদিনের রিমান্ডে নেয়া হয় হাজী মো. সেলিমের গাড়িচালক মো. মিজানুর রহমান খানকে। এই মামলার তদন্ত ‘প্রভাবমুক্ত’ভাবে করা হবে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
ইরফান সেলিমকে আটকের পর চকবাজারে গিয়ে বিতর্কিত জমি দখলের পাশাপাশি পছন্দের ভবন, মার্কেট ও দোকান নিজেদের নামে নিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায় এমপি হাজী সেলিম ও তার ছেলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে।
তাদের কথায় কেউ রাজি না হলে নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকিতে এলাকাছাড়া করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি সরকারি জমিও। ভয়ে হাজী সেলিম ও ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পেত না কেউ।
যদিও এখন অনেকেই কথা বলছেন। চকবাজারে ফরিদ হোসেন নামের একজন জানান, আশিক টাওয়ারে ছিল তাদের মূল টর্চার সেল। এখানে ব্যবসায়ীদের নিয়ে নির্যাতন করা হতো।
ভবন, জমি ও দোকান দখলেও প্রকৃত মালিককে টর্চার সেলে নিয়ে নির্যাতন করত তারা। শুধু মদিনা আশিক টাওয়ারে ১৪ তলায় নয়, এমন আরও টর্চার সেল রয়েছে তাদের।
চকবাজারের অতি পরিচিত জাহাজ বিল্ডিং দখলে নেয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে। আর নির্বিঘ্নে দখল ও অনিয়ম চালিয়ে যেতে মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী বিভিন্ন ব্যক্তিকে ‘ম্যানেজ’ করত সে।
ইরফান সেলিমকে গ্রেফতারের পর পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার এলাকায় স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের দখলে থাকা জমি উদ্ধার করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক।
সোমবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা ছাড়াই হাজী সেলিমের দেয়া সীমানাপ্রাচীর ভেঙে দখলকৃত জমি বুঝে নিয়েছেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা। মে মাসে দখল হয়ে গেলেও এতদিন নিশ্চুপ ছিল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
জমি উদ্ধারের বিষয়টি যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন অগ্রণী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) আবদুস সালাম মোল্যা।
ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজধানীর মৌলভীবাজার এলাকায় ১৪ শতাংশ জমির ওপর একটি দুইতলা ভবন ছিল। স্বাধীনতার পর নির্মিত ভবনটি অনেক পুরনো হওয়ায় কিছুদিন আগে নতুন ভবনে শাখা স্থানান্তর করা হয়েছে।
ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর ব্যাংকের শাখাটিও বন্ধ ছিল। এখানে দায়িত্বরত নিরাপত্তা প্রহরী ভল্ট পাহারা দিতে ভেতরে অবস্থান করেন।
সেই সুযোগে চলতি বছরের মে মাসে আমাদের পুরনো ভবনটি গুঁড়িয়ে দিয়ে দখলে নেন হাজী সেলিম। সোমবার সীমানাপ্রাচীরের গেটের তালা ভেঙে তা দখলে নিয়েছি আমরা। পুরনো ভবনে ব্যাংকের অনেক সরঞ্জাম ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিল বলে জানান ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
র্যাব সূত্র জানায়, সোমবার দুপুরে গ্রেফতারের সময় ইরফান মদ্যপ অবস্থায় ছিল। রাত সাড়ে ১২টায় র্যাব-৩ থেকে কারাগারে পাঠানোর আগ পর্যন্ত নেশাগ্রস্ত ছিলেন তিনি।
রোববার রাত থেকে অভিযানের আগ পর্যন্ত পান করেছেন আড়াই বোতল বিদেশি মদ। স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে একসঙ্গে এত মদ পান করেছেন বলে জানান তিনি (ইরফান)।
র্যাবের অভিযানকালে চকবাজারের রাজসিক প্রাসাদ ‘চাঁন সরদার দাদা বাড়ি’র চতুর্থ তলায় অবস্থান করছিলেন ইরফান। আর তার স্ত্রী তখন ভবনের তৃতীয় তলায় ছিলেন।
নেটওয়ার্কিং সিস্টেম : কানাডায় পড়াশোনা করে এসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হন ইরফান সেলিম। কানাডায় পড়ার কারণে বাংলায় কথা বলতে অভ্যস্ত নন তিনি।
র্যাব কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তার বেশিরভাগ কথা হয় ইংরেজিতে। ইরফানের গ্রেফতার সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পুরো এলাকায় নিজস্ব নেটওয়ার্কিং সিস্টেম গড়ে তোলেন ইরফান।
অর্ধশত ওয়াকিটকির মাধ্যমে পুরো এলাকা ছিল তার নজরদারিতে। গ্রেফতারের সময় তার বাসা থেকে কালো রঙের অবৈধ ৩৮টি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়।
সেখানে সক্রিয় ছিল একটি উন্নত মানের ‘রিপিটারও’। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, মূলত ফ্রিকোয়েন্সি সরকারিভাবে নির্ধারিত থাকে। যে কেউ চাইলেই এটি নিজের মতো করে ব্যবহার করতে পারে না।
কিন্তু ইরফান সেলিম অনুমোদন ছাড়া সেটি করেছেন। সাধারণত একাধিক ওয়াকিটকির মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করা হলে নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ পাওয়া যায় না। সেখানে ‘নোয়াইজ’ হয়। সেজন্যই নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ পেতে ব্যবহার করতে হয় ‘রিপিটার’।
এর মাধ্যমে অসংখ্য ওয়াকিটকি সেটকে নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্কের আওতায় আনা যায়। ‘রিপিটার’ সিগন্যাল সিস্টেমকে ব্যুস্ট করে জঞ্জালহীন সংযোগ স্থাপন করে। এসব প্রযুক্তি আনা হয় দেশের বাইরে থেকে।
একটি সূত্র জানায়, গ্রেফতারের পর ইরফানের কাছে র্যাবের কর্মকর্তারা জানতে চান, কেন এই অবৈধ ডিভাইসগুলো তিনি রাখলেন? এ সময় তিনি বলেন, এটা আবার ‘হবি’ (শখ)।
এগুলো দিয়ে মূলত কী করতেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কথায় কথায় বলে ফেলেন, রাস্তা ক্লিয়ার করতে ব্যবহার করতাম। পুরান ঢাকার সরু রাস্তায় কীভাবে এত বড় গাড়ি নিয়ে ঢুকতেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখন আসতাম, রাস্তার মোড়ে মোড়ে ভলান্টিয়ার থাকত।
তারা রাস্তা ক্লিয়ার করে রাখত। র্যাব সূত্র বলছে, মোবাইল ফোনের পরিবর্তে ওয়াকিটকি ব্যবহারের অন্যতম কারণ হল- এটি ‘অলওয়েজ কানেক্টেড’ থাকে। ফলে যোগাযোগে বেগ পেতে হয় না। তাছাড়া ট্র্যাকিং এড়াতে ভিপিএস সেট ব্যবহার করতেন তিনি। এমন ৫টি সেট উদ্ধার হয় তার বাসা থেকে। জানা গেছে, ইরফান সেলিমের ১২ জন দেহরক্ষী ছিলেন। তাদের সহযোগিতায় কাজ করত আরও ৩০ জন।
জানা যায়, যখন ইরফানকে সোমবার রাত ৮টা ৮ মিনিটে ভবন থেকে নামিয়ে গাড়িতে তোলা হয়, তখন তার উচ্চ রক্তচাপ ছিল। ফলে এ সময় তাকে কিছু জিজ্ঞেস করা হয়নি।
সেখান থেকে যখন র্যাব-৩-এর কার্যালয়ে নেয়া হয়, তখন বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চান র্যাব কর্মকর্তারা। এ সময় উদ্ধার হ্যান্ডকাফ সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি ইন্দোনেশিয়া থেকে এনেছেন।
ব্রিফকেসের সঙ্গে মাঝে মাঝে হাতকড়া নিয়ে বের হতেন। আর সোনালী রঙের অত্যাধুনিক দুরবিনের বিষয়ে তিনি বলেন, গত শনিবার এটি তিনি গুলশান থেকে কিনে আনেন।
এটিও শখের বসে আনেন বলে জানান তিনি। এর বাইরে তার কক্ষে একটি অত্যাধুনিক ‘কমান্ডো নাইফ’ পাওয়া গেছে। র্যাবের একটি সূত্র জানায়, এটি সাধারণ কোনো ছুরি নয়।
তারা ছুরিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন। এর মধ্যে ‘সারভাইবাল কিট’ ছিল। যার হ্যান্ডেলে একটি কম্পাসও রয়েছে। এটিও দেশের বাইরে থেকে আনা হয়েছে বলে জানায় সূত্রটি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ মঙ্গলবার বিকালে যুগান্তরকে বলেন, অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি চকবাজার থানায় চারটি মামলা করা হয়েছে।
দণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, শুরুতে ইরফান সেলিমের ছয় মাস, ছয় মাস করে এক বছর কারাদণ্ডের কথা বলা হয়েছে। এখানে একটু পরিবর্তন এসেছে।
সেটি হল র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত ইরফানকে মাদক সেবনের দায়ে এক বছর এবং অবৈধ ওয়াকিটকি ব্যবহারের জন্য ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন। আর জাহিদকে অননুমোদিত ওয়াকিটকি ব্যবহার করায় ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
সিসিটিভি ক্যামেরা ও ওয়াকিটকি দিয়ে চকবাজারের কয়েক কিলোমিটার এলাকা তার নজরদারিতে ছিল বলেও জানান তিনি।
রিমান্ড শুনানি আজ : নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের মামলায় আজ বুধবার সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী মো. জাহিদের রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওই দুই আসামিকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো এবং সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
এ পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর আসামিদের গ্রেফতার দেখানো ও রিমান্ড শুনানির ওই দিন ধার্য করেন।
এদিকে এদিন মামলার অপর আসামি এবি সিদ্দিক দিপুকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান কৌঁসুলি মো. আবদুল্লাহ আবু আসামির রিমান্ড চেয়ে শুনানি করেন। অপরদিকে আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট প্রাণ নাথ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদার আসামির তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইল শহরে এক বন্ধুর বাড়ি থেকে দিপুকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির রমনা বিভাগের উপকমিশনার এইচএম আজিমুল হক বলেন, গ্রেফতারের পর তাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে আনা হয়। সেখান থেকে দুপুরে তাকে ধানমণ্ডি থানায় হস্তান্তর করা হয়।
ধানমণ্ডি থানায় করা ওই মামলায় এ নিয়ে চারজন গ্রেফতার হল। এর মধ্যে হাজী সেলিমের ছেলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফান সেলিম, তার দেহরক্ষী মোহাম্মদ জাহিদ এবং তার গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে সোমবার গ্রেফতার করা হয়।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিকালে পুলিশের ঢাকা মহানগর পুলিশের ধানমণ্ডি জোনের এডিসি মো. আবদুল্লাহিল কাফী যুগান্তরকে বলেন, ইরফান ও জাহিদকে ‘শ্যোন অ্যারেস্ট’ দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
আর দিপুর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। আগে আরও একজন ছিলেন রিমান্ডে। ফলে আমাদের কাছে এখন দু’জন রিমান্ডে আছে। এর মধ্যে গাড়িচালক মিজান জিজ্ঞাসাবাদে সেদিন মারধরের ঘটনা স্বীকার করেছে।
তদন্ত হবে প্রভাবমুক্ত : হাজী সেলিমের ছেলে কাউন্সিলর ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের মামলাটির তদন্ত ‘প্রভাবমুক্ত’ভাবে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
মঙ্গলবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে এ মামলা প্রভাবমুক্তভাবে তদন্ত করা হবে। এখানে প্রভাব খাটানোর চেষ্টাও কেউ করবে না।
একজন অপরাধীকে যেভাবে বিচারের আওতায় আনা দরকার, একইভাবে তাকেও আনা হবে। তিনি বলেন, গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এরইমধ্যে মামলার সব আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলার নথি দেখে প্রয়োজনে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হবে। সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে মামলাটি দ্রুত তদন্ত শেষ করে আদালতে পাঠানো হবে।
কারাগারে কোয়ারেন্টিনে ইরফান : ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষীকে সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে যুগান্তরকে জানিয়েছেন র্যাবের মুখপাত্র লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ।
ইরফানের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা হবে বলেও জানান তিনি। এদিকে ঢাকার জেলার মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ইরফান কারাগারে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।
করোনাভাইরাস মহামারীকালে কারাগারের নিয়মানুযায়ী যে কোনো নতুন বন্দিকে একটি সেলে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।
অফিস : ৪৪-ক, অতিশ দীপঙ্কর রোড, মুগদা, ঢাকা । সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএস ভবন, ১২০/এ মতিঝিল, ঢাকা
মোবাইল : ০১৭৫৩-৫২৬৩৩৩ ই-মেইল : dainikkalerkhobor5@gmail.com
কারিগরি সহযোগিতায় ফ্লাস টেকনোলজি