বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২১ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ঈশ্বরগঞ্জে সেতু নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ। কালের খবর আসামি গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতি সংক্রান্ত পুলিশের সার্কুলার স্থগিত ইসরাইলি গণহত্যার প্রতিবাদে সাইনবোর্ড প্রেস ক্লাবের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষ বরণ করেছে বিএনপি। কালের খবর জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদের উদ্যােগে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত আওয়ামী দোসরদের রক্ষা করতে এখনো স্বেরাচারীদের হয়ে কাজ করছে প্রশাসন। কালের খবর মাটিরাঙ্গায় ওয়াদুদ ভূইয়ার পক্ষ থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মাঝে মিনারেল ওয়াটার ও কলম বিতরণ। কালের খবর রবিনটেক্স (বাংলাদেশ) লিমিটেড ও কম্পটেক্স বাংলাদেশ লিমিটেড এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপর হামলা। কালের খবর মা‌টিরাঙ্গায় আওয়ামীলী‌গ নেতা আব্দুল কাদের গ্রেফতার। কালের খবর ইসরাইয়েলের বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে উত্তাল মাটিরাঙ্গা। কালের খবর
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশেষ ওএমএস তালিকায় কোটিপতি, বাদ ৩৩৭ ধনী। কালের খবর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশেষ ওএমএস তালিকায় কোটিপতি, বাদ ৩৩৭ ধনী। কালের খবর

Goodman Travels

করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের দেয়া বিশেষ ওএমএস সুবিধাভোগীর তালিকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাড়ি-মার্কেটের মালিক এমনকি কোটিপতির নামও চিহ্নিত হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর যাচাই-বাছাইয়ে গরিবের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ৩৩৭ ধনীর নাম।

জেলা খাদ্য বিভাগ ও পৌরসভা যাচাই-বাছাই করে এই ধনীদের নাম বাদ দেয়। এর আগে তালিকা তৈরিতে অনিয়ম করায় দুই কাউন্সিলর ও এক ডিলার বরখাস্ত হন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গোকর্নঘাট এলাকার তালিকায় অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তির নাম পায় খাদ্য বিভাগ। তাদের মধ্যে প্রায় ২ কোটি টাকার মালিক নাজির মিয়ার দুই ছেলে বিদেশে থাকেন। বাজারে মার্কেট আছে এরফানুল বারীর, আছে দোতলা বাড়ি। আবদুল হেকিমও মার্কেটের মালিক। বাজারে মার্কেট আছে রোকসানা বেগমের; তিনি আবার কাউন্সিলর প্রার্থী।

তালিকায় থাকা ধন মিয়া নামের এক ব্যক্তির ৪ ছেলে বিদেশে। আছে পাকা বাড়ি। গোকর্নঘাট বাজারের সবচেয়ে বড় মার্কেটের মালিক সামছুল হকের নামও তালিকায়। আরও ছিলেন রবীন্দ্র বর্মন, যার দুই ভাই থাকেন বিদেশে, ৩০০ শতাংশ জমির মালিক তিনি। হোসেন মিয়ার দোতলা বাড়ি, তাতে লাগানো এসি। বাজারে দোকান আছে তার। দুটি মাইক্রোবাসের মালিক শফিক মিয়া। কবির মৃধা বড় ব্যবসায়ী।

করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের দেয়া বিশেষ ওএমএস সুবিধাভোগীর তালিকায় কাদের জায়গায় নাম ওঠে বিত্তশালী এই মানুষগুলোর?

ভিক্ষুক, ভবঘুরে, সাধারণ শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, পরিবহন শ্রমিক, চায়ের দোকানদার, হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকজনের বদলে নাম দেয়া হয় তাদের।

এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. ফেরদৌস মিয়ার নেতৃত্বাধীন এ-সংক্রান্ত কমিটি তালিকাটি তৈরি করে। গণমাধ্যমে অন্য আরেকটি ওয়ার্ডের অনিয়মের চিত্র প্রকাশ হলে জেলা প্রশাসন ও খাদ্য বিভাগ তদন্তে নামে। শুরু হয় পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের তালিকা যাচাই-বাছাই।

প্রথম দফায় প্রত্যেক ওয়ার্ডে করা ৫০০ জনের নামের তালিকার খোঁজ-খবরে সন্ধান মিলে এই ধনপতিদের। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তালিকায় মোট ২৪ জন সম্পদশালী শনাক্ত হন।

খাদ্য বিভাগের চকিত যাচাইয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে মহল্লার সর্দার ও দোতলা বাড়ির মালিক কিতাব আলী; ২ ছেলে প্রবাসে এবং ৭ রুমের দুই ইউনিটের বাড়ির মালিক মো. আবদুর রউফ; দোতলা বাড়ির মালিক জীবন সাহা, নেরোজ আলী, সাকিল ও উপল মালাকারের নাম পাওয়া যায় ওই তালিকায়।

১২ নম্বর ওয়ার্ডে সৌদি প্রবাসী তিন ছেলের বাবা বাচ্চু মিয়া; তিন ছেলে প্রবাসে ও এক ছেলে দেশে সরকারি চাকুরের মা হেনেরা বেগম; দুই প্রবাসীর পিতা নারায়ণ ঋষি; দোতলা বাড়ির মালিক ও ধান ব্যবসায়ী শওকত ওসমান; ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি হারুন অর রশিদ; কাউন্সিলরের পরিবারের সদস্যসহ ৩৩ জনের নাম প্পাওয়া যায় গরিবের তালিকায়।

১০ নম্বর ওয়ার্ডে ডিলারের স্ত্রী-সন্তান ও স্বজন, কাউন্সিলরের কয়েক ভাই, একাধিক ৫ তলা বাড়ির মালিক ও লন্ডন প্রবাসীসহ ২২ জন; ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৭ জন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ তলা বাড়ির মালিক মো. আবু বাকের, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৮ জন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ২ জন এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এমন আরো ৭ জনের নাম চিহ্নিত হয়।

জেলা খাদ্য অফিস জানায়, দৈবচয়ন ভিত্তিতে ভোক্তা তালিকা যাচাই করে মোট ১৩১ জন সামর্থ্যবানের নাম খুঁজে পান তারা। একই সাথে জেলা প্রশাসক ও ওএমএস কমিটির সভাপতি হায়াত-উদ-দৌলা খান লিখিতভাবে পৌর মেয়রকে তালিকা যাচাই-বাছাই করতে বলেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা সামর্থ্যবানদের নাম বাদ দিয়ে সংশোধিত তালিকা পাঠান খাদ্য অফিসে। তাতে দেখা যায়, প্রথম দফায় করা ৬ হাজার জনের তালিকা থেকে সব মিলিয়ে ৩৩৭ জনের নাম বাদ দেয়া হয়েছে।

এর মধ্যে ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ১৫ জন, ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ৪ জন, ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ৩৫ জন, ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ৬১ জন, ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ২২ জন, ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ১২ জন, ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ১৭ জন, ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ৫০ জন এবং ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ২৪ জনের নাম সংশোধন করে তালিকা জমা দেন।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবির নাথ চৌধুরী জানান, তালিকা যাচাই-বাছাই করে পৌরসভা থেকে তাদের কাছে এখনো সংশোধিত তালিকা দেয়া হচ্ছে। তারা ওই তালিকা অনুসারে নতুন ভোক্তার নামে কার্ড ইস্যু করছেন। প্রতি ওয়ার্ডে ১ হাজার ৬০০ জন করে এই পৌরসভায় মোট ১৯ হাজার ২০০ জন বিশেষ ওএমএস সুবিধা পাবেন। তালিকা তৈরির কাজ এখনো শেষ হয়নি।

তালিকা তৈরিতে অনিয়মের কারণে ১০ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মাকবুল হোসাইন ও রফিকুল ইসলাম নেহার সাময়িক বরখাস্ত হন। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ডিলার মো. শাহআলমের ওএমএস ডিলারশিপ বাতিল করা হয়।

দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন..

কালের খবর মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com