শ্রীমঙ্গল,মৌলভীবাজার থেকে সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম হাসান,কালের খবর :
র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম একের পর এক ঘটনা সৃষ্টি করে চলেছে যা মৌলভীবাজার জেলাবাসী অনেক দিন মনে রাখবে।তার এই নিত্য নতুন কায়দায় অপরাধের বিরুদ্ধে অভিযান ও সাধারণ লোকদের প্রতি ভালো বাসার সাথে সচেতনতা তৈরির প্রক্রিয়া সত্যি চমক তৈরি করেছে মিডিয়াসহ নানা মহলে। “শাসন করা তারই সাজে,সোহাগ করে যে জন” শত বছরের এই প্রবাদ বাক্যের হুবহু বাস্তব চিত্র একে চলেছেন তিনি। মঙ্গলবার দিনভর মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন প্রান্তে তার নেতৃত্বে তৎপর ছিলেন র্যাব সদস্যরা। যেসব ক্ষুদ্র যানবাহনে একাধিক যাত্রী পাওয়া গেছে, তাদেরকে তাৎক্ষণিক নামিয়ে দিয়ে খালি রিকশা বা ইজি বাইকে তুলে দিয়েছেন র্যাব সদস্যরা। শুধু তাই নয়, সরকারি নির্দেশনা মান্যকারী রিকশা চালকদেরকে দশ টাকা করে বকশিসও দিয়েছেন তারা, শর্ত একটাই- করোনা পরিস্থিতি থাকাকালীন কখনো সামাজিক দূরত্ব ভঙ্গ করে একাধিক যাত্রী তারা রিকশায় নেবেন না। এসময় একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রিকশা বের না করতেও অনুরোধ জানান তারা। রিকশা চালকেরা খুশি মনেই শর্ত মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বকশিসটি গ্রহণ করেছেন।
এভাবেই তুলে দিচ্ছেন ক্ষুদ্র চালকদের হাতে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা প্রণোদনা।তবুও যেন আইন মেনে চলে। মঙ্গলবার দুপুর ২ ঘটিকার সময় শ্রীমঙ্গল চৌমোহনায় সরেজমিনে দেখা যায় সারি বেঁধে চলমান যানবাহনের পাল্লা। এর বেশিরভাগই রিকশা অথবা মোটরসাইকেল। এক সময় অভিযোগ ছিল চালকদের থেকে র্যাব-পুলিশ পয়সা নেই আজ দেখা গেলো তারা উল্টো চিত্র,আইন অমান্যকারী ক্ষুদ্র চালকদের হাতে পয়সা তুলে দেওয়ার।এই সময় চলমান রমজানের রোজা রেখে এই কাঁঠাল ফাটা রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করছেন র্যাব সদস্যরা। যে যানবাহনেই সামাজিক দূরত্ব লঙ্ঘনের প্রমান পাওয়া গেছে, তাদেরকেই থামাচ্ছিলেন তারা। বাবা ও ছেলে এক মোটরসাইকেলে চড়ে বাজার থেকে ফিরছিলেন। চৌমোহনা মোড়ে পৌঁছামাত্র পড়ে যান র্যাবের থাবায়। শত অনুরোধে কর্ণপাত না করে র্যাব সদস্যরা পুত্রকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে খালি একটা রিকশা ডেকে তাতে তুলে দেয়। সাথে রিকশাওয়ালার হাতে ধরিয়ে দেয় নগদ দশ টাকা বকশিস। আজ সারাদিনে এভাবে মোট শতাধিক রিকশা চালককে এমন বকশিস দেওয়া হয়েছে মর্মে র্যাব সূত্রে জানা গেছে।
এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম থেকে চালক খুশি হয়ে সামাজিক দূরত্ব রক্ষার প্রণোদনা গ্রহণ করছেন। এ প্রসঙ্গে র্যাব-৯ এর এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম জানান, সরকার কর্তৃক আগামী ১০ মে হতে সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড শুরুর সিদ্ধান্তের পর রিকশায় একাধিক যাত্রী বহনকে আমি সামাজিক দূরত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি। তাই রিকশাচালক ভাইদেরকে তাদের বাহনে একের অধিক যাত্রী না নেওয়ার ক্ষেত্রে ইতিবাচকভাবে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে আমরা তাদেরকে সামান্য বকশিস প্রদান করেছি।
এছাড়াও সরকার কর্তৃক গৃহীত নতুন সিদ্ধান্তকে লোকজন যেন সামাজিক দূরত্ব অমান্যের লাইসেন্স মনে না করেন, সেটি নিশ্চিত করার জন্য আমরা মাঠে সতর্ক রয়েছি। কোন ক্ষুদ্র বাহন ; যেমন মোটরসাইকেল বা রিকশায় একাধিক যাত্রী দেখা গেলে আমরা একজন থেকে বাকিদেরকে নেমে যেতে অনুরোধ জানিয়েছি।
এই টাকা সরকারি খাত থেকে খরচ করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে এএসপি আনোয়ার বলেন, ‘না, এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগ। তাই খরচটিও করছি নিজের পকেট থেকেই। আমি আসলে ছোটখাটো আভিযানিক খরচের ক্ষেত্রে সরকারি টাকার দিকে তাকিয়ে থাকার পক্ষে নই। কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, এরকম হলে সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করাটা কঠিনতর হয়ে পড়ে।
উল্লেখ্য, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে একের পর এক ব্যতিক্রমধর্মী কাজের মাধ্যমে দেশবাসীর মনোযোগ আকৃষ্ট করেছেন র্যাব-৯ এর এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম। আমাদের প্রতিনিধির সাথে কথা হয় স্থানীয় শ্রীমঙ্গল এলাকাবাসীর কয়েকজনের সাথে আলাপকালে অনেকেই বলেন ভাই উনি আমাদের সুপারম্যান। উনার মত যদি সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ। অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করতেন তাহলে দেশটা আজ অনেক উন্নত শিখরে পৌঁছে যেত। বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।
অফিস : ৪৪-ক, অতিশ দীপঙ্কর রোড, মুগদা, ঢাকা । সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএস ভবন, ১২০/এ মতিঝিল, ঢাকা
মোবাইল : ০১৭৫৩-৫২৬৩৩৩ ই-মেইল : dainikkalerkhobor5@gmail.com
কারিগরি সহযোগিতায় ফ্লাস টেকনোলজি