কালের খবর রিপোর্ট :
কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে গত দুই বছর ধরে নানা কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি এসেছে পরিবারের তরফে। চলছে বিএনপি নেত্রীর প্যারোলে মুক্তির আলোচনা। শুক্রবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি মহাসচিবের মধ্যে এ নিয়ে ফোনালাপের বিষয়টি প্রকাশ হওয়ায় নতুন করে আলোচনা সর্বত্র। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যতো আলোচনা হচ্ছে সে অনুযায়ী অগ্রগতি হলে তা রাজনীতির জন্যই শুভ হবে। রাজনৈতিক সূত্র বলছে, আলোচনা হলেও এখন পর্যন্ত বড় কোন অগ্রগতি নেই। খালেদা জিয়ার প্যারোলের দাবি বিএনপির তরফে উত্থাপনের পর গতকাল এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে আওয়ামী লীগের বৈঠকে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও অবহিত করা হয়েছে।
যদিও গতকাল তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, প্যারোল আবেদন করলে খালেদা জিয়াকে আগে দোষ স্বীকার করতে হবে। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, সরকারের তরফে ইতিবাচক বার্তা পেলেই কেবল খালেদার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করা হবে। এজন্য সরকারের দিকে চেয়ে আছে পরিবার। অন্যদিক এ সপ্তাহেই খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে আবারও উচ্চ আদালতে আবেদন করার কথা জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। অসুস্থতার কারণে গত বছরের ১লা এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন খালেদা জিয়া।
ইতোমধ্যে বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ প্রেরণের জন্য মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ চেয়ে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার। সবকিছু ঠিক থাকলে আজকালের মধ্যেই তার পরিবার জেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে প্যারোলের আবেদন করবেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে নিশ্চয়তা পেলেই আবেদন করা হবে বলে জানা গেছে। পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, মুক্তি পেলে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া লণ্ডনে যেতে পারেন। লন্ডন থেকে সৌদি আরবে গিয়েও চিকিৎসা নিতে পারেন। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মামুন ইতিমধ্যেই সব প্রক্রিয়া গুছিয়ে এনেছেন। সব আইনি প্রক্রিয়া সেরে মেডিকেল বোর্ডের সার্টিফিকেট ও স্থানান্তরের সুপারিশ নিয়েই খালেদা জিয়াকে লণ্ডন পাঠানো হতে পারে।
শুক্রবার খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান। এদিন গুলশানে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সিনিয়র আইনজীবীদের সাথে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বৈঠক হয়। বৈঠকে খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ম্যাডামের মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। বিভিন্নভাবে কথা বলছি। দেশবাসী তার মুক্তি কামনা করছেন। তার পরিবারের পক্ষ থেকে এডভান্স চিকিৎসার জন্য আবেদন করা হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে পরিবারের পক্ষ থেকেই আবেদন করা হয়েছে। সরকারের এখন এগুলো নিয়ে অন্য কোনো রাজনীতি না করে সম্পূর্ণ মানবিক কারণে তাকে মুক্তি দেয়া উচিত।
এদিকে গতকাল আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য দু’টি পথ খোলা আছে। একটি হলো তাকে আইনি প্রক্রিয়ায় লড়াই করে জামিন নিতে হবে। অন্যটি হলো প্যারোলে মুক্তির জন্য সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে। তবে ওনারাতো সেটা করেননি।
এ ব্যাপারে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মানবজমনিকে বলেন, দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য আমরা আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। শনিবার বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতেও আমাদের বিক্ষোভ মিছিল করতে দেয়নি পুলিশ। আমাদের সবধরণের সভা সমাবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে। তবে আমাদের এ আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। প্যারোলের বিষয়ে উনার পরিবার কথা বলছেন কি-না সেটা আমার জানা নেই।
অফিস : ৪৪-ক, অতিশ দীপঙ্কর রোড, মুগদা, ঢাকা । সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএস ভবন, ১২০/এ মতিঝিল, ঢাকা
মোবাইল : ০১৭৫৩-৫২৬৩৩৩ ই-মেইল : dainikkalerkhobor5@gmail.com
কারিগরি সহযোগিতায় ফ্লাস টেকনোলজি