কালের খবর রিপোর্ট :
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে দলটির নেতারা বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সরকার পতনের আন্দোলন একসঙ্গে চলবে। আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করা হবে। গতকাল দলের নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন। ওদিকে সকালে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয় ঐকফ্রন্ট প্রতিবাদ সমাবেশ করে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে। এতে ড. কামাল হোসেনসহ জোটের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে নেতারা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজপথের আন্দোলনে নামার আহবান জানান। খালেদা জিয়ার কারাবাসের দুই বছর পূর্তিতে বিএনপির ডাকা সমাবেশ থেকে আগামী শনিবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়।
সমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতন্ত্রের আপোসহীন নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় রাজনৈতিক কারণে বন্দি রাখা হয়েছে।
তিনি গুরুতর অসুস্থ, নিজে খেতে পারেন না, চলতে পারে না। অন্যের সাহায্য নিয়ে চলতে হয়। নিজের হাতে খেতেও পারেন না। ইতোমধ্যে তার ওজন অনেক কমে গেছে। এই অবৈধ সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতির কারণে দুই বছর বিনা দোষে আটক করে রাখছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া তার রাজনৈতিক জীবনে প্রতিটা সময় গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, জেল খেটেছেন। আমরা অনেক আন্দোলন করেছি, সভা সমাবেশ করেছি, নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। এখন একটাই কথা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবোই এবং সরকারকে বাধ্য করব খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে। আগামীতে আন্দোলনের ডাক আসলে সবাইকে রাজপথে নামতে হবে। গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে আমরা কেউ রাজপথ ছেড়ে বাড়ি ফিরবো না। তিনি আরো বলেন, এই সরকার আইনকে বিশ্বাস করেনা। তারা নিজেরাই সংসদকে কেটে তছনছ করে দিয়েছে। মানুষের সকল অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে। সরকার ক্ষমতায় রয়েছে জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় জোর করে টিকে রয়েছে। কারণ তাদের জনগণের ম্যান্ডেট নেই। এ সরকার জনগণের সরকার নয়। তারা গণতান্ত্রিক চেতনাকে ধ্বংস করেছে। শুধু তাই নয় বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এভাবে বিচার বিভাগ চলতে পারে না। দেশের প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের নলের মুখে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। প্রশাসনকে সম্পূর্ণ হাতের নাগালে রেখেছে।
অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী নিজের মুখ থেকে সত্য বেরিয়ে গেছে, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। একদিন আগে অর্থমন্ত্রী বললেন সবদিক থেকে অর্থনীতি ঊর্ধ্বমুখী। পরের দিন বললেন অর্থনীতির অবস্থা ভালো না। এরপরও তার চাকরি থাকে কি করে? দেশ এখন দুর্নীতিতে ভাসছে। দুর্নীতির জন্য যুবলীগের প্রেসিডেন্ট, ছাত্রলীগের প্রসিডেন্টকে বাদ দিতে হয়েছে। একবার নিজেদের দিকে তাকান, দেখবেন আপনাদেরকেও বাদ দিতে হবে। দুর্নীতির কারণে রপ্তানি আয় নিচের দিকে, রাজস্ব আয় কমে গেছে কিন্তু দুর্নীতি কমেনি। শিল্প কারখানা, গার্মেন্টস শিল্প আজ হুমকির মুখে। তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। জনগণ এখন আর আওয়ামী লীগকে চায় না। বিএনপির মহাসচিব বলেন, ঢাকা সিটি নির্বাচনে মাত্র ১৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জনগণের মেয়র হওয়া যায় না। তারা শুধু মেশিনের মেয়র। ইশরাক ও তাবিথ আউয়াল হচ্ছেন জনগণের মেয়র। এই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় ভোট দিন। জনগণের মেয়র নির্বাচিত করুন। নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন দিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে। তারা জোড় করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। ২০১৪ সালের নির্বাচনকে জনগণ বয়কট করেছিল। কেউ ভোট দেয়নি। তারপরও সরকার ক্ষমতায় আছে। যখন একাদশ সংসদ নির্বাচন আসলো তখন সরকার বুঝতে পেরেছে যে, খালেদা জিয়া বাইরে থাকলে তাদের পরাজয় নিশ্চিত। আওয়ামী লীগ দলগতভাবে ভোটের জামানত হারাতে পারে। তখন তারা খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠালো। সরকার ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও আমরা নির্বাচনে গেলাম। কারণ, খালেদাকে মুক্তির আন্দোলনের অংশ হিসাবে। তখনও সরকার ভয় পেলো। তারা প্রশাসনকে ব্যবহার করে ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচন আগের রাতে করল। যারা জনগণের ভোটে বিশ্বাস করে না তাদের জনগণের প্রতি কোন দায়বদ্ধতা নেই। এ কারণে তাদের দেশের মানুষের প্রতি কোন আস্থা নেই, বিশ্বাস নেই। তারা বিরোধী মত ও পথের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, একটি ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার চরিতার্থ করার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেছে সরকার। শুধু খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়নি, গোটা বাংলাদেশকে কারাগারে পরিণত করেছে সরকার। দেশের মানুষ মনে করেছিল যে খালেদা জিয়া বিভিন্ন কারণে উচ্চ আদালতে ১ দিনের মধ্যে জামিন পাবেন। জামিন তার ন্যয্য অধিকার। কিন্তু, তার এখন পর্যন্ত জামিন হয়নি। সরকার সম্পূর্ণ ফ্যাসিবাদী কায়দায় ক্ষমতা দখল করেছে। তারা ধ্বংস করেছে দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে।
বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর তারা অত্যাচার নির্যাতন করছে। বর্তমান সরকার দেশের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই সরকারের আমলে ৯ টি ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেছে। দেশে বিনিয়োগ হচ্ছে না। দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে। আওয়ামী লীগের লোকজন দেশের টাকা ডাকাতি করে বিদেশে পাচার করছে। এই সরকার ভোট চোর, টাকা চোর। স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, লজ্জা করে বলতে যে, আমি বাংলাদেশের নাগরিক। বিদেশে যখন আলোচনা হয় তখন তারা বলে, তোমার দেশে কি আইনের শাসন নাই। জামিন পাবে না কেনো? যখন তাদের বলি, রাজনৈতিক কারণে জামিন পায় না। এরপরও আইনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমেই বেগম জিয়া মুক্তি পাবেন। আর খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কর্মসূচি দেয়া হবে।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ভোট ডাকাতির মাধ্যমে এই সরকার দেশকে দখল করে আছে। তারা বিএনপির চেয়ারপারসনকে জেলে বন্দি করে রেখেছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর মামলার ওপর মামলা দিয়ে যাচ্ছে। তার মধ্যেও আমাদের নেতাকর্মীরা দল ছেড়ে যায়নি। তাদের মনোবল শক্ত হয়েছে। আগামীতে দেশনেত্রীকে মুক্ত করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।
মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদেরকে আজকে অনেকে বলেন, বিএনপি আন্দোলন করছে না বা করতে পারে না। কিন্তু আজকের সভা কি আন্দোলনের অংশ না? আমরা মিছিল ও মিটিং করি, লোক হয়। তবে আমাদের যার যার এলাকার কোন্দল আছে তা ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সুতরাং নিজেদের ভিতরের কোন্দল আগে মিটাতে হবে। তাহলেই বেগম জিয়া মুক্ত হবেন। সেভাবে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা যারা বিএনপি নেতা। তারা আজ লজ্জিত অবস্থায় আপনাদের সামনে দণ্ডায়মান। কারণ যাকে আমরা ্তুমা্থ ভেবেছি। তিনি আজ দুই বছর ধরে কারাগারে। কিন্তু আমারা এতো হাজার হাজার নেতাকর্মী আছি, এরপরও আমরা তাকে মুক্ত করতে পারি নাই। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেছেন, দেশের জনগণ আওয়ামী লীগের বিপক্ষে চলে গেছে। তারা আর কোনোদিনই ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। আজকে যারা দেশের রাষ্ট্র-ক্ষমতায় আছে তারা বারবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করেছে। অতীতে তারা বাকশাল গঠন করেছে। আবারও তারা একদলীয় শাসন কায়েম করেছে। জনগণকে বন্দি করে বেশি দিন এই বাকশাল টিকবে না।
দুপুর ২টায় খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এই সমাবেশ শুরু হয়। এর আগে দুপুর ১২টা থেকে বিএনপি এবং এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে খণ্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে সমাবেত হতে থাকেন। এসময় সমাবেশ থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগানে নয়াপল্টন মুখরিত করে তোলেন। দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাজাহান, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
এবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামুন: ড. কামাল
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আর সভা সমাবেশ করে নয়, এবার মাঠে নামতে হবে। গতকাল বিএনপি’র চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলার ২ বছর কারাবাসের প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবিতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক প্রতিবাদ সভায় ড. কামাল হোসেন এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, জনগণ ক্ষমতার মালিক। মালিকদের স্বাধীনতা স্বৈরাচাররা নষ্ট করেছে। ইতিহাস বলে, স্বৈরাচার সরকার জনগণ গ্রহণ করেনি। জনগণই ক্ষমতার মালিক। কিন্তু যেভাবে সরকার দেশ চালাচ্ছে এটা মেনে নেয়া যায় না। দেশে জনগণ ক্ষমতাচ্যুত। মালিকদের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। সরকারের প্রতি ড. কামাল বলেন, আমি বলবো আপনারা সরে দাঁড়ান। যারা মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন তাদের অসম্মান করা হচ্ছে। যেভাবে তারা ক্ষমতা আত্মসাৎ করে রেখেছে সেটি রুখতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। জনগণ দেশের মালিক। মালিকের ভূমিকা রাখতে হলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। তিনি বলেন, সংবিধান নষ্ট করা হচ্ছে। এটা গুরুতর অপরাধ। আমরা তাদের থেকে দেশকে রক্ষা করি। উন্নয়নের নামে যে লুটপাট হচ্ছে তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তিনি আরো বলেন, পদত্যাগ না করলে কী করতে হবে? হাত ধরে টেনে রাস্তায় নামিয়ে দিতে হবে। সত্যিকার অর্থে দেশের মালিককে মালিকের ভূমিকায় আনতে হবে। খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪৮ বছর হয়ে গেছে। ৫০ বছর হতে যাচ্ছে। স্বাধীনতার এত বছর পর রাজবন্দী শুনতে কেমন লাগে। বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সভা করতে হবে, দাবি করতে হবে এটা অকল্পনীয়। আর সভা নয় এবার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে। মাঠে নামতে হবে। চলেন আমরা মালিক হিসেবে মাঠে নামি। যারা জিম্মি করে রেখেছে তাদের দমন করি।
প্রতিবাদ সভায় জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি কিভাবে যাবেন আপনি সিদ্ধান্ত নেন। শান্তিপূর্ণভাবে যাবেন কিনা ভেবে দেখেন? শান্তিপূর্ণ ভাবে যেতে চাইলে খালেদা জিয়ার মুক্তি দিন।
তিনি আরো বলেন, সিটি নির্বাচনে জনগণ ভোট না দিয়ে ঘোষণা দিয়েছে, গণতান্ত্রিক উপায়ে জনগণের আর নির্বাচনের ওপর কোন ভরসা নেই। আমাদের আলোচনার কিছু নেই জনগণ বুঝে নিয়েছে। জনগণ ভোট দিতে যায়নি এটা অশনিসংকেত। একটা শক্ত বার্তা।
তিনি আরো বলেন, খালেদার জিয়ার একটাই অপরাধ তিনি জনপ্রিয়। সরকার তাকে ভয় পায়। খালেদা জিয়ার মিথ্যা মেডিকেল রিপোর্ট দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসা করছেন না। ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগের মতো আমরাও ক্ষমতায় ছিলাম। বিএনপি কী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ৮৪টি মামলা দিয়েছে। আমাদের বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ৮৪টি মামলা দিয়েছে। অনেক হাস্যকর মামলাও রয়েছে। উনি নাকি ঢাকায় ময়লার গাড়িতে আগুন দিয়েছেন এই মামলাটিও তাকে লড়তে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বক্তব্য দিয়ে নয়, সবাইকে পথে নেমে আন্দোলন করতে হবে। রাজপথের আন্দোলন ছাড়া গণতন্ত্র উদ্ধার সম্ভব নয়। বিরোধী দলকে দমন করা হচ্ছে। বিরোধী দলের বিরুদ্ধে এক লাখ ৩৫ হাজার মামলা দেয়া হয়েছে। বিএনপি হিংসার রাজনীতি করে না। বিএনপি চায় সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার। প্রতিবাদ সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে অরাজকতা চলছে। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনে নির্বাচন কমিশনকে পরিবর্তন করে শক্তিশালী কাউকে দায়িত্ব দেয়া উচিত। অন্যদিকে, দেশের বাইরের শত্রুরাও অগ্রসর হচ্ছে। তা মোকাবিলা করতে হবে। গণতন্ত্রের জন্য দরকার হলে সারাদেশে পদযাত্রা করতে হবে।
সভায় নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, অর্থনীতি ধসে সরকারের কাছে টাকা নেই। এখন বিভিন্ন সংস্থার উদ্বৃত্ত টাকা জমা নিচ্ছে। তিনি সরকার পতনের জন্য আন্দোলনের জোরালো আহ্বান জানিয়ে বলেন, ঐক্যফ্রন্টের নিজের সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার। বিএনপিরও সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার। এই সরকার থেকে মুক্তি চাইলে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামতে হবে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী কিছু সুপারিশ করে বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে আর কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা ঠিক হবে না। কামাল হোসেনকে রিভিউ পিটিশন করতে হবে। এ ছাড়া তিনি কামাল হোসেনকে সারা দেশে পদযাত্রা করার আহ্বান জানান। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গনফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দপ্তর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিকল্পধারার চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারি, গণ দলের সভাপতি গোলাম মাওলানা, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি এডভোকেট মহসিন রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ক শহিদুল্লাহ কায়সার, নাগরিক ঐক্যের সদস্য ফজলুল হক সরকার, জেএসডির কার্যকরী সভাপতি সা ক ম আনিছুর রহমান খান, বিকল্প ধারা বাংলাদেশে মহাসচিব এডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল প্রমুখ।
অফিস : ৪৪-ক, অতিশ দীপঙ্কর রোড, মুগদা, ঢাকা । সম্পাদকীয় কার্যালয় : আরএস ভবন, ১২০/এ মতিঝিল, ঢাকা
মোবাইল : ০১৭৫৩-৫২৬৩৩৩ ই-মেইল : dainikkalerkhobor5@gmail.com
কারিগরি সহযোগিতায় ফ্লাস টেকনোলজি